ডিএর দাবিতে আদালত কর্মচারী সমিতির কর্মবিরতি। নিজস্ব চিত্র
‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির মধ্যেই সরকারি কর্মচারীদের কর্মবিরতি ছিল। বৃহস্পতিবার তার জেরে, উত্তর দিনাজপুরের দু’টি শিবিরে বাধল ঝামেলা। একটি ঘটনায় এক তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হন। গৌড়বঙ্গের অন্য দুই জেলা মালদহ এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে এ দিন কর্মবিরতির প্রভাব ছিল মিশ্র।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইসলামপুর থানার আগডিমঠিখুন্তি পঞ্চায়েতের দীঘল বস্তি এলাকায় ছিল শিবির। স্থানীয়দের অভিযোগ, রোজার মধ্যে দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই শিবিরে আসেন। কিন্তু তাঁদের প্রায় দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অভিযোগ, বেশ কিছু প্রকল্পের ফর্ম দেওয়া হয়নি। কিছু প্রকল্পের পরিষেবা চালু হয়নি। তা নিয়েই বিক্ষোভ দেখিয়ে তৃণমূল নেতা আকবর আলি এবং তার অনুগামীরা শিবিরে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ওই নেতার দাবি, ভাঙচুর নয়, ঝামেলা হয়েছিল মাত্র। আকবর প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীর ‘অনুগামী’ বলেই পরিচিত। এ বিষয়ে জানতে আব্দুল করিম চৌধুরীকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করা হলেও তার উত্তর দেননি। ইসলামপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘ঘটনার পর আকবর আলিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’
অন্য দিকে, একাধিক বার আবেদনের পরেও বার্ধক্য ভাতা না মেলার অভিযোগে বিক্ষোভ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় রায়গঞ্জ ব্লকের শীতগ্রাম পঞ্চায়েতের তেঁতুলতলায়। বরোই প্রাথমিক স্কুলের মাঠে ওই শিবিরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরকারি কর্মীদের বচসা বাধে। পরে, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগের কোনও শিবিরে তাঁদের আবেদন জমার নথি দেওয়া হয়নি। এ দিন তাঁরা ভাতা নিয়ে খোঁজ নিতে গেলে, তাঁদের ফের ওই প্রকল্পে আবেদন করতেবলা হয়।
রায়গঞ্জের বিডিও শুভজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘নতুন করে সরকারি অনুমোদন না থাকায়, গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে আবেদনকারী অনেকে বৃদ্ধ ভাতা পাচ্ছেন না।’’
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এ দিন কর্মবিরতির প্রভাব ছিল মিশ্র। যদিও দুয়ারে শিবিরগুলি যথাযথ ভাবেই চলেছে। জেলা প্রশাসনিক ভবনের কয়েকটি দফতর, মহকুমা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত এবং ট্রেজারিতে কাজ হয়নি। পাশাপাশি, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা আদালত এবং গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতেও পরিষেবা মেলেনি বলেই অভিযোগ। মালদহে জেলা প্রশাসনিক ভবন এবং আদালত স্বাভাবিক ছিল বলেই দাবি। যদিও দু’টি জায়গাতেই কয়েক জন কর্মচারী ব্যাজ পরে কর্মবিরতিতে শামিল হন। দুয়ারে সরকারে কোনও প্রভাব এই জেলাতেও পড়েনি।