দার্জিলিঙে বন্ধ-আন্দোলনে কাঠ পাচারকারীদের পৌষমাস চলছে বলে বন দফতরের খবর। এর মধ্যেই তারা উত্তরবঙ্গে আবার একটি কাঠ পাচার চক্রের খোঁজ পেয়েছে। বন দফতর জানায়, বুধবার রাতে ধূপগুড়ির কাছে দু’টি ট্রাক আটক করে প্রচুর সেগুন কাঠ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ওই চোরাই কাঠ আনা হচ্ছিল নাগাল্যান্ড থেকে। পাকড়াও করা হয়েছে জালুয়া প্রসাদ নামে এক পাচারকারীকে। তার বাড়ি উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে। প্রাথমিক তদন্তে বন দফতর জেনেছে, বাজেয়াপ্ত করা কাঠের বাজারদর প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। সব কাঠ পটনায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলনের পর থেকে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় কাঠ পাচারের রমরমা বেড়েছে। ইতিমধ্যে প্রচুর বহুমূল্য কাঠ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে কিছু পাচারকারীকে। পাচার চক্রে জড়িত কিছু মোর্চা নেতা এবং শিলিগুড়ির কিছু ব্যবসায়ীর নামও জানা গিয়েছে। তবে সেই চক্রের সঙ্গে বুধবার রাতে পাকড়াও করা পাচারকারীর যোগসূত্র নেই বলেই জানাচ্ছে বন দফতর।
উত্তরবঙ্গের এক বনকর্তা জানান, পাহা়ড়ের কাঠ পাচার এবং বন্যপ্রাণী চোরাশিকার রুখতে বন দফতরের একটি বিশেষ দল সক্রিয় রয়েছে। সম্প্রতি তাদের কাছে খবর এসেছিল, অসম থেকে কোচবিহার হয়ে চোরাই কাঠ এ রাজ্যে ঢুকছে। কোন ট্রাকে চেপে আসছে, তা-ও জানতে পারেন তদন্তকারীরা। সেই অনুযায়ী বুধবার কোচবিহার থেকেই ওই দু’টি গাড়ির পিছু নেয় বন দফতরের রেঞ্জার সঞ্জয় দত্তের নেতৃত্বাধীন একটি দল। ধূপগুড়ির কাছে ঝাঝাঙ্গিতে পৌঁছতেই ট্রাকগুলি ঘিরে ফেলা হয়। বন অফিসারেরা জানান, জালুয়া প্রসাদের সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিল। তারা অন্ধকারে পালিয়ে গিয়েছে।
জালুয়াকে জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, নাগাল্যান্ডের কটকটির একটি জঙ্গল ঘেরা গ্রামে সেগুন গাছ কাটা হয়। সেগুলি স্থানীয় কিছু শ্রমিককে দিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে আসা হচ্ছিল। জালুয়াকে জেরা করে এই চক্রে জড়িত আরও কয়েক জনের কথা জানা গিয়েছে। বন দফতরের একাংশ বলছেন, নাগাল্যান্ড থেকে এ রাজ্যে আসতে চোরাই কাঠবোঝাই ট্রাক দু’টিকে বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট পেরোতে হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, পাচারকারীরা চেকপোস্টের সরকারি অফিসারদের নজর এড়াল কী করে?
সদুত্তর মেলেনি।