একই সঙ্গে আত্মঘাতী হয়েছেন এই দুই তরুণী।—নিজস্ব চিত্র।
একই ঘরে একসঙ্গে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল দুই বান্ধবীকে। তাঁদের এই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে দানা বেঁধেছে রহস্য। সোমবার সকালে দুই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয় বোলপুর শহরের নায়েকপাড়ায়।
ছোটবেলা থেকেই বন্ধুত্ব ছিল অনুতমা মণ্ডল এবং পায়েল ঘোষের। দু’জনেই বোলপুরের শৈলবালা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। এখন দু’জনেই বিএড পড়ছেন, তবে আলাদা কলেজে। তবে, ছোটবেলার সেই বন্ধুত্ব অটুট ছিল। অন্যদিকে, দুই তরুণীর বাবা কলকাতা পুলিশের কর্মী। তাঁরাও একে অপরের বন্ধু।সেই সূত্রে দুই পরিবারের মধ্যে যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা। দুই বন্ধুর একে অপরের বাড়িতে রাত কাটানোও খুব স্বাভাবিক ছিল দুই পরিবারের কাছে।
অনুতমার পরিবার পুলিশকে জানিয়েছে, রবিবার রাতে পায়েল থাকতে যান অনুতমার বাড়িতে। সকালে অনেকবেলা পর্যন্ত দরজা না খোলায় ডাকাডাকি করেন অনুতমার মা। কিন্তু বার বার ডাকার পরেও কেউ দরজা না খোলায় বিপদের গন্ধ পান পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান। তাঁদের পরামর্শেই খবর দেওয়া হয় বোলপুর থানায়।
আরও পড়ুন: রাফাল আঁচে পুড়ল সংসদ, স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষের
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নিয়েই মধ্যপ্রদেশে কৃষি ঋণ মকুব করলেন কমল নাথ
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভাঙে। তারপরেই দেখা যায় বিছানায় পড়ে রয়েছে দুই তরুণীর নিথর দেহ। ঘটনাস্থলে পৌঁছন বোলপুরের এসডিপিও সৌমিত্র বড়ুয়া। দু’জনেরই মুখে থেকে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছিল। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, বিষের প্রভাবেই মৃত্যু হয়েছে দুই তরুণীর। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, “ঘর ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। সম্ভবত আত্মঘাতী হয়েছেন দু’জন।” ঘরে যদিও কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই তরুণীর পরিবার কোনও সূত্র দিতে পারেননি। পুলিশ ইতিমধ্যেই দু’জনের মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে তদন্তের প্রয়োজনে। তবে দুই তরুণীর বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে এক যুবকের বিষয়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল অনুতমার। অন্যদিকে পায়েলের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল সেই যুবকের। এই বিষয়টি কোনও ভাবে আত্মহত্যার কারণ কি না তা নিশ্চিত নয় পুলিশ। তবে ওই তথ্যটি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।