—প্রতীকী ছবি।
দুই মেয়ের বিয়ে ঠিক করেছিল পরিবার। মত ছিল না তাদের। বিয়ে এড়াতে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল তারা। সঙ্গে নিয়েছিল ছোট বোনকেও। সম্বল ‘কন্যাশ্রী' প্রকল্পের টাকা। পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর থেকে পালিয়ে আসা সেই তিন কন্যাকে দমদম থেকে উদ্ধার করে বাড়ি ফেরাল রেলপুলিশ এবং পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ অক্টোবর দুর্গাপুর মহকুমার একটি থানায় মেয়েগুলির পরিবারের তরফে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ২৮ অক্টোবর দমদম স্টেশনের কাছে তিন বোনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করে রেলপুলিশ। বাড়ির ঠিকানা জেনে খবর দেওয়া হয় সেখানকার থানায়। তার পরে আদালতের অনুমতি নিয়ে তিন জনকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আঠারোর বড় বোন উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হতে পারেননি। নাবালিকা মেজো বোন একাদশ ও ছোট বোন দশম শ্রেণির ছাত্রী। বড় ও মেজো মেয়ের বিয়ের ঠিক করেছিল পরিবার।
বড় মেয়ের কথায়, “আমরা দুই বোন বিয়ে করতে চাইনি। তাই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। কী করব ভাবিনি। হাতে কন্যাশ্রীর টাকা ছিল। কলকাতায় ছিলাম।” মেজো মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছে, সে পড়তে চায়। ছোট মেয়েটিও পুলিশকে জানায়, দিদিদের কথা ভেবেই বাড়ি ছেড়েছিল সে। তারা পড়তে চায়।
মেজো মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেওয়া হবে না, এই মর্মে বাবার কাছে মুচলেকা নিয়েছে। প্রশাসন। ব্লক প্রশাসন তিনটি মেয়ের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রশাসনের তরফে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সচেতন করা হবে।”
সমাজকর্মী শাশ্বতী ঘোষের প্রতিক্রিয়া, "নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে বহু মেয়ে পড়তে চাইছে, এটা আনন্দের বিষয়। এই মেয়েগুলিকে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে সরকারকে। অনেক সময়ে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের উপরেও চাপ তৈরি হয়। সমাজের এই দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো দরকার।”