সোনু চৌধুরী
স্নান করতে নেমে তিনি সমুদ্রের আরও গভীরে যেতে চেয়েছিলেন। বাধা দিয়েছিলেন বন্ধু এবং পাড়ার দাদারা। হোটেলে ফেরার নাম করে ফের অন্যত্র গিয়ে সমুদ্রে নেমেছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার গারুলিয়া পুরসভার শ্যামপুরের সোনু চৌধুরী (১৮)। তার কিছু ক্ষণ পরে সৈকত থেকে উদ্ধার হল তাঁর নিথর দেহ।
সোনুর সঙ্গেই ওই দিন উদ্ধার হয় ঝাড়খণ্ডের কোডার্মার বাসিন্দা অঙ্কিতকুমার অগ্রবালের (৩৯) দেহ। অঙ্কিত শনিবার পরিবারের সঙ্গে দিঘায় বেড়াতে এসেছিলেন। রবিবার দুপুরে উদয়পুর ঘুরতে যান এবং পরিবারের সঙ্গে সমুদ্রে নামেন। তখনই টাল সামলাতে না পেরে তলিয়ে যান তিনি।
শ্যামপুরের গোপীনাথজি রোডে বাড়ি সোনুর। বাবা শঙ্কর চৌধুরী চটকলের কর্মী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সোনুই বড়। দুই বোন স্কুলে পড়ে। স্কুলের গণ্ডি টপকে আর পড়াশোনা না করে কাজের খোঁজ করছিলেন সোনু। দিন কয়েক আগে বাসে দিঘা বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন পাড়ারই কয়েক জন যুবক। তাতে সামিল হন সোনুও।
সোমবার সেই ছেলের মৃত্যুর খবর আসার পর থেকেই বাড়িতে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ সকলের। নোয়াপাড়া থানা থেকে এ দিনই সোনুর বাড়িতে খবর পাঠানো হয়। সকালেই দেহ আনতে রওনা দেন পরিবারের কয়েক জন। সোনুর খুড়তুতো দাদা রাজু জানান, শনিবার বাসে রওনা হয়েছিলেন সবাই। রবিবার দুপুরে দল বেঁধে সমুদ্রে স্নানে নেমেছিলেন সোনুরা। শুরু থেকেই বারবার গভীর সমুদ্রে যেতে চাইছিলেন ওই যুবক। কিন্তু তাঁকে সাবধান করেছিলেন বন্ধুরা। এক সময়ে সোনু শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে হোটেলে ফিরতে চান।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুরে হোটেলে ফিরে সোনুর দেখা পাননি তাঁর বন্ধুরা। হোটেল কর্তৃপক্ষও জানান, কেউ সোনুদের ঘরের চাবি নেননি। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। কিন্তু সন্ধান না পেয়ে সন্ধ্যায় পুলিশে জানানো হয়। রবিবার সকালে পুলিশ জানায়, সৈকতে এক কিশোরের দেহ মিলেছে। সোনুর বন্ধুরা গিয়ে তাঁকে শনাক্ত করেন।
তদন্তকারীদের অনুমান, হোটেলে ফেরার নাম করে সোনু ফের সমুদ্রে নেমেছিলেন। পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি সোনুর পরিবার। বাবা শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘এটা নিছকই দুর্ঘটনা। আমাদের কোনও অভিযোগ নেই।’’