BJP's Nabanna Abhiyan

নবান্ন অভিযান: তৃণমূলের ফাঁস করা গোপন ভিডিয়োর সূত্রে বিজেপির দুই নেতাকে আটক করা হল ঘাটাল থেকে

নবান্ন অভিযান নিয়ে তৃণমূল গোপন ভিডিয়ো ফাঁস করতেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দুই বিজেপি নেতাকে আটক করল পুলিশ। ধৃতদের নাম বাবলু গঙ্গোপাধ্যায় এবং সৌমেন চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৪ ১৩:৩১
Share:

তৃণমূলের ফাঁস করা ভিডিয়োয় এই দু’জনকে দেখা গিয়েছে। ছবি: তৃণমূলের পোস্ট করা ভিডিয়ো থেকে।

নবান্ন অভিযান নিয়ে গোপন ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছে তৃণমূল। তার সূত্র ধরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দুই বিজেপি নেতাকে আটক করল পুলিশ। ধৃতদের নাম বাবলু গঙ্গোপাধ্যায় এবং সৌমেন চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, তৃণমূলের প্রকাশ্যে আনা ভিডিয়োয় তাঁদের দেখা গিয়েছে। বাবলু ঘাটাল মহকুমার অন্তর্গত ঘাটাল থানার খড়ার পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের একমাত্র বিজেপি কাউন্সিলর। তবে এখনও একজন পলাতক। তাঁর নাম বিপ্লব মাল। তিনি চন্দ্রকোনা ২ ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে খবর মিলেছে পুলিশ সূত্রে।

Advertisement

পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। এক জন পলাতক। আটক হওয়া দুই বিজেপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। পরে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে।’’ দুই নেতাকে আটক করে দলকে বদনাম করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।

ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেন, ‘‘তৃণমূল এবং পুলিশ এক হয়ে বিজেপিকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। আরজি কর নিয়ে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা সকলেই দেখেছেন। আর এখন বিজেপির দু’জনকে আটক করা হল ঘাটালে।’’

Advertisement

সোমবার সকালেই তৃণমূল অভিযোগ করেছে যে, আরজি কর-কাণ্ডকে হাতিয়ার করে নবান্ন অভিযানের নামে গুলি চালানো, এমনকি খুনেরও ষড়যন্ত্র করেছে বিজেপি। সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘একটা বড় চক্রান্ত চলছে কালকের মিছিল ঘিরে। শকুনের রাজনীতি করছে বিজেপি। ওরা বলছে বডি চাই।’’ পরে তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে দু’টি গোপন ভিডিয়োও প্রকাশ করেছেন কুণাল (ওই ভিডিয়ো দু’টির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তাতে একাধিক ব্যক্তির মুখে ঘুরেফিরে এসেছে ওই শব্দ। কেউ বলেছেন ‘বডি চাই’। কেউ বলেছেন, ‘‘বডি পড়বেই। রাবার বুলেট চলবে।’’ ভিডিয়োয় তাঁরা এ-ও দাবি করছেন যে, ২৭ তারিখের আন্দোলন আদৌ শান্তিপূর্ণ হবে না। তার কারণ, ‘বডি’ অর্থাৎ লাশ বা মৃতদেহ না পেলে আন্দোলন জোরদার হয় না।’’

কুণাল জানিয়েছেন, বিভিন্ন সূত্র মারফত ভিডিয়োটি তাঁদের হাতে এসে পৌঁছেছে। প্রথম ভিডিয়োয় এক যুবককে দেখা গিয়েছে। তবে নেপথ্যে গলা শোনা যায় আরও দু’জনের। এক নেপথ্য কণ্ঠস্বর প্রশ্ন করে, ‘‘২৭ তারিখের যে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ভাবে হবে বলছেন, তা কি আদৌ শান্তিপূর্ণ হবে?’’ জবাবে পর্দায় থাকা যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘‘গুলি চলবে এখানে রাবার বুলেট চলবে’’। পরের ভিডিয়োটিতেও প্রায় প্রথম ভিডিয়োটিরই বক্তব্য ঘুরেফিরে এসেছে। সেখানেও এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘একটা-দুটো বডি যদি না পড়ে কিচ্ছু হবে না।’’

তৃণমূলের এই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে বিজেপি। বিজেপির মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ আন্দোলন গতি পাওয়ায় তৃণমূল হতাশায় ভুগছে, তাই এমন অদ্ভুত আচরণ।’’ কিন্তু শাসকদলের প্রকাশ্যে আনা ভিডিয়ো নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই আটক ঘাটালে বিজেপির দুই নেতা।

ঘটনাচক্রে, এর পরেই রাজ্য পুলিশের তরফে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা এবং এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার সাংবাদিক বৈঠক করেছেন। মনোজ বলেন, ‘‘যে হেতু অনুমতি নেওয়া হয়নি, তাই এই কর্মসূচি আইনত বৈধ নয়। কারণ নবান্ন সংরক্ষিত জায়গা। এখানে যে কোনও কর্মসূচি করার জন্য অনুমতি নিতে হয়, কেউ অনুমতি নেয়নি। ফলে এটা বেআইনি। তারা অন্য কোথাও জমায়েত করলে আমরা সাহায্য করব। তবে নবান্নে নয়।’’ সুপ্রতিমও বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের নাম করে এই অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ নামে কোনও সংগঠনই নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement