নাজেহাল: ফিরছেন পর্যটকরা। শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
ফের গন্ডগোল গ্যাংটকে।
ক’দিন আগে দার্জিলিং থেকে রাতের অন্ধকারে নামতে বাধ্য হয়েছেন পর্যটকেরা। শুক্রবার একই ছবি দেখা গেল গ্যাংটকে। হঠাৎ মৌখিক নোটিসে রাতারাতি হোটেল খালি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন হোটেল মালিকেরা। সন্ধে থেকে শুরু হয় ‘অবতরণ’। রাত ৩টে অবধি চলে পর্যটক নামানোর কাজ। কর্মীদের অর্ধেকও নেমে এসেছেন শিলিগুড়িতে। স্বাভাবিকের থেকে তিন গুণ ভাড়া দিয়ে রাত জেগে পাহাড়ি পথে নামতে গিয়ে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েন পর্যটকেরা। যার সূত্রপাত মোর্চার একটি সিদ্ধান্তে। অভিযোগ, বন্ধ শুরু হওয়ার পরে তারা শিলিগুড়ি থেকে সিকিমের নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ি ছাড়া অন্য কোনও গাড়ি সে রাজ্যে যেতে দিচ্ছে না। তার জেরে এ দিন শিলিগুড়িতে সিকিমের পরিবহণ দফতরের অফিস ও ডিপো ঘিরে বিক্ষোভ হয়। সমতলের চালক ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের একাংশের এই আন্দোলনে কোনও গাড়ি চলেনি। আন্দোলনকারীরা এই হুঁশিয়ারিও দেন, ওই পথে সব নম্বর প্লেটের গাড়ি চলতে না দিলে সিকিমের গাড়িও শিলিগুড়িতে চলতে পারবে না।
এর পরে ওই দিন সন্ধেয় গ্যাংটকে এমজি মার্গে মোর্চা মোমবাতি মিছিল করে। তা নিয়ে আতঙ্ক ছড়ায় পর্যটকদের মধ্যে। এক হোটেল মালিক জানাচ্ছেন, সন্ধের পরে মৌখিক ভাবে জানানো হয়, পর্যটকদের রাতেই সমতলে পাঠিয়ে দিলে ভাল হয়। সেই অনুযায়ী তিনি তাঁর দু’টি হোটেলের ৪০টির মধ্যে ৩৭টি ঘরই খালি করে দেন। গ্যাংটকের প্রায় ৫৫০টি হোটেল থেকে অনেকেই রাতারাতি নেমে এসেছেন শিলিগুড়িতে। মাথা পিছু হাজার টাকা ভাড়া গুনেছেন অনেকে। সিকিম সরকারের এক মুখপাত্র অবশ্য জানাচ্ছেন, তাঁরা কাউকে চলে যেতে বলেননি। সিকিমের শাসকদলের এক শীর্ষ নেতার দাবি, সমতলে গাড়ি যাতায়াত বন্ধ, এমন হুমকির পরে ভয়েই অনেকে নেমে গিয়েছেন। সিকিম প্রশাসনের এক কর্তা জানান, দার্জিলিঙে বন্ধের জেরে গ্যাংটক ও শিলিগুড়ি, দু’শহরই বিপুল লোকসানের মুখে। দুই শহরে রেষারেষি যাতে না বাড়ে, সে দিকে দু’রাজ্যকেই খেয়াল রাখতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী পবনকুমার চামলিংয়ের আইনি উপদেষ্টা কে টি গ্যালসেন বলেন, ‘‘দলের প্রথম সারির নেতারা বৈঠক করেছেন। সিকিমে পর্যটকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে দিকে সব রকম খেয়াল রাখা হচ্ছে।’’ গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিকে সমর্থন করে সিকিম বিধানসভা সম্প্রতি প্রস্তাব পাশ করেছে। চামলিং তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানালে রাজ্যের তরফে এর প্রতিবাদ করা হয়েছিল।
তিক্ততা তৈরি হয়েছে এতেও।