বিজেপি এবং সিপিএম কাউন্সিলরদের দলে টেনে পুরাতন মালদহ পুরসভা দখল করতে চলেছে তৃণমূল। ওই ত্রিশঙ্কু পুরসভায় কী ঘটবে, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। রবিবার সন্ধের পরে বিজেপির দু’জন ও সিপিএমের এক জন কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তার অবসান হল। রবিবার রাতে মালদহের পুরাতন সার্কিট হাউসে তৃণমূলের বৈঠকে দলের জয়ী প্রার্থীদের সঙ্গে হাজির হন বিজেপির দুই জয়ী প্রার্থী নেপাল হালদার ও গৌরাঙ্গ সাহা এবং সিপিএমের চন্দনা হালদার। তাঁদের নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।
বিরোধীদের অভিযোগ, প্রলোভন দেখিয়ে দল ভাঙিয়েছে তৃণমূল। স্থানীয় সূত্রের খবর, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপির জয়ী প্রার্থী গৌরাঙ্গ সাহার পুরাতন মালদহের হোটেলে অসামাজিক কাজের অভিযোগ আছে। তা ঢাকতেই গৌরাঙ্গ তৃণমূলে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। গৌরাঙ্গবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। অপপ্রচার চলছে।’’ তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘কাউকে টাকা দিয়ে বা পদের লোভ দেখিয়ে দলে নেওয়া হয়নি। তাঁরা উন্নয়নের স্বার্থে দলে যোগ দিয়েছেন।’’
আজ, সোমবার বোর্ড গড়ার কথা। ওই পুরসভায় ২০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ১০টি আসন। বিজেপি ৫, নির্দল ৩ এবং সিপিএম ২। বিরোধীদের দাবি, নেপালবাবু ও গৌরাঙ্গবাবু আগে সিপিএমের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তবে দল থেকে টিকিট না পাওয়ায় পরে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির জেলা নেতা তথা জয়ী প্রার্থী সৌমেন মিত্র বলেন, ‘‘বিরোধী দশ জন দুপুর পর্যন্ত একসঙ্গে ছিলাম। ওই তিন জন ব্যক্তিগত কাজ দেখিয়ে চলে যান। পরে তাঁদের ফোন করলে বন্ধ ছিল। তাঁরা মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। কী লোভে ওঁরা গেলেন, বলতে পারব না।’’
বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা তথা জয়ী প্রার্থী বশিষ্ঠ ত্রিবেদী অভিযোগ করেন, ‘‘টাকা দিয়ে কেনাবেচা হয়েছে। বোর্ড গড়তে তৃণমূল লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করছে। এর জবাব মানুষের কাছে দিতে হবে।’’ অন্য দিকে, নেপালবাবু ও চন্দনাদেবীরা বলেন, ‘‘টাকার বদলে বা কোনও শর্তে তৃণমূলে আসিনি। উন্নয়নের জন্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছি। মানুষকে আমরা বোঝাব উন্নয়ন করতে হলে শাসক দলের সঙ্গে থাকতে হবে। বিরোধী দলে থাকলে হবে না।’’
সিপিএমের প্রার্থী যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘যিনি গিয়েছেন মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। এই নিয়ে দলীয় স্তরে আলোচনা হবে।’ বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দু শেখর রায় বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।’’
শুভেন্দুবাবু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘এ দিন বিরোধী দলের তিন জয়ী প্রার্থী আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। তাঁরা উন্নয়নের সামিল হতেই আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। এখানে কেনাবেচার কোনও প্রশ্ন নেই।’’