বুধবার বিকেলে ফাঁকা দিঘার সৈকত। ছবি: শুভেন্দু কামিলা
ধীরে ধীরে মেঘ ঘনাচ্ছে। ঢেউ বাড়ছে সমুদ্রে। প্রশাসনের তরফে জলে নামতে মানাও করা হচ্ছে। তাও দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরে বুধবার সকালে পর্যটকদের বেপরোয়া ভাবই নজরে এল। দিঘায় ঘুরে পর্যটকদের অনুরোধ করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। তবে তিনিও বলেন, “পর্যটকেরা আমাদের অতিথি, এই জেলার লক্ষ্মী। তাঁদের তো আর ঘাড়ধাক্কা দেওয়া যায় না।”
ঘূর্ণিঝড় ডেনার আগাম সতর্কতা হিসেবে এ দিন দুপুর থেকেই দিঘা, মন্দারমণির সৈকত খালি করে চলে যেতে পর্যটকদের নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। জানানো হয়, ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ সমুদ্র স্নানও। দিন গড়াতে ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সেই সব উপেক্ষা করেই সকাল থেকে নিউ দিঘায় সমুদ্র স্নানে নামেন এক দল পর্যটক। পরে সরিয়ে দেন নুলিয়া এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। বেলা যত গড়িয়েছে, দিঘার আবহাওয়া তত খারাপ হয়েছে। বৃষ্টি, বাতাসের দাপট। ছিল মৃদু জলোচ্ছ্বাস। ওল্ড থেকে নিউ দিঘা, সৈকত দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। তা ডিঙিয়েই সমুদ্রের কাছাকাছি গিয়েছেন বেপরোয়া পর্যটকেরা। চলেছে রিল বানানো। বিকেলেও ওল্ড দিঘায় কংক্রিটের বাঁধানো সৈকতে বসে উত্তাল সমুদ্র দেখেছেন পর্যটকেরা। দড়ির বাধা মানেননি। সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা পর্যটকদের হোটেলে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও কেউই প্রায় শোনেননি।
হুগলির বৈদ্যবাটি থেকে সস্ত্রীক আসা দিগন্ত হাজরা বললেন, “ঝড়ের সময় কখনও দিঘায় থাকিনি। তাই চলে এসেছি।” উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থেকে আসা ৪৫ জনের দলের অনেকের দাবি, “হোটেল ছাড়ার কথা কেউ কিছুই বলেনি।”
ওল্ড ও নিউ দিঘা মিলিয়ে প্রায় দু’হাজার হোটেল আর লজ রয়েছে। প্রায় সর্বত্রই পর্যটক আছেন। এ বিষয়ে দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তীর দাবি, “অল্প যে ক’জন আছেন, বৃহস্পতিবার সকালের আগেই তাঁরা চলে যাবেন বলে জানিয়েছেন।” তিনি জানান, হোটেল মালিকদের বলা হয়েছে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত যাঁদের বুকিং বাতিল করা হচ্ছে, তাঁদের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দিতে হবে। কেউ পরে আসতে চাইলে সেই অনুযায়ী অগ্রিমের হিসাব করে নেওয়া যেতে পারে।