গ্রেফতার ঝাড়খণ্ডের প্রথম সারির মাওবাদী নেতা! প্রতীকী ছবি।
রাজ্য পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ঝাড়খণ্ডের প্রথম সারির মাওবাদী নেতা! নদিয়ার নাকাশিপাড়া এলাকার বর্নিয়া গ্রাম থেকে প্রদীপ মণ্ডল নামে ওই মাওবাদী নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, ধৃত মাওবাদী নেতার পৈতৃক বাড়ি ডায়মন্ড হারবারের বাহাদুরপুর গ্রামে। বিহার-ঝাড়খণ্ড মাওবাদী সামরিক কমিশনের সদস্য প্রদীপকে দীর্ঘ দিন ধরেই খুঁজছিল ঝাড়খণ্ড পুলিশ। তাঁর মাথার দামও এক লক্ষ টাকা ঘোষণা করা হয়। তদন্তকারীদের ওই সূত্রের দাবি, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন ধৃত প্রদীপ। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের অবশ্য পাল্টা দাবি, প্রদীপ দীর্ঘ দিন ধরে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁকে ‘বেআইনি’ ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কলকাতার হেস্টিংস থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রদীপকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার প্রদীপকে আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় নদিয়া-মুর্শিদাবাদের মাওবাদী মডিউলের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে ধৃতের কাছ থেকে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানি পাল বলেন, ‘‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স থেকে বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছিল। বিস্তারিত তথ্য আমাদের হাতে নেই।’’
কিন্তু কী ভাবে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন ‘মাওবাদী নেতা’? তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, সংগ্রামী কৃষক মঞ্চের নামে একটি ‘ছদ্ম’ সংগঠনের আড়ালে থেকে নদিয়া-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি থানা এলাকা, পলাশিপাড়া এবং নাকাশিপাড়া এলাকায় আবার সংগঠন বিস্তারের কাজ শুরু করেছিলেন প্রদীপ। তাঁর এই কাজে অন্যতম সহায়ক ছিলেন জিসান নামে আর এক মাওবাদী নেতা। দীর্ঘ দিন ধরেই দু’জনের উপর নজর রাখা হচ্ছিল। তাঁদের গতিবিধির উপর নজরদারি চালিয়েই প্রদীপের পাশাপাশি জিসানকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারির সময় দুই নেতার কাছ থেকে দু’টি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে বলে খবর পুলিশ সূত্রে দাবি।
পুলিশের দাবি উড়িয়ে দিয়ে এপিডিআর-এর পক্ষ থেকে মৌতুলি নাগ বলেন, ‘‘ধৃত দু’জন দীর্ঘ দিন ধরে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। কৃষক আন্দোলন দমন করতে সরকার স্বৈরাচারী ভাবে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।’’