— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গত কাল রাজ্যে তিনটি নির্বাচনী জনসভা করে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। রাতে ভুবনেশ্বরে ছিলেন। আজ আবার আসবেন জোড়া সভা করতে। মমতা গতকাল দলের জোড়া মিছিলে অংশ নেন। আজ তাঁর একাধিক সভা। সাধুদের ‘একাংশের রাজনীতি করা’ নিয়ে শনিবার মমতা যে তোপ দেগেছিলেন, রবিবার তা নিয়ে তিনটি সভাতেই সমালোচনা করেন মোদী। আজ মমতা তার জবাব দেবেন বলেই মনে করছেন তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। এই নতুন বিতর্কের মধ্যেই রাজ্যে ভোট চলছে সাত কেন্দ্রে। সাত দফার লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে এটি পঞ্চম। দেশে মোট ৪৯ আসনে আজ ভোটদান।
দিল্লিবাড়ির লড়াই: পঞ্চম দফা
দেশের ভোট
সোমবার বাংলার সাত কেন্দ্র-সহ দেশের মোট ৪৯টি আসনে প্রার্থীদের ভোট-ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ভোটদাতারা। পঞ্চম দফায় ভোট হচ্ছে দেশের ছ’টি রাজ্য এবং দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। বাংলার সাত কেন্দ্র আরামবাগ, বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, শ্রীরামপুর এবং হুগলি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে সোমবার। মহারাষ্ট্রের তিনটি, ওড়িশার পাঁচটি, উত্তরপ্রদেশের ১৪টি, বিহারের পাঁচটি, মহারাষ্ট্রের ১৩টি আসন ছাড়াও ভোট হচ্ছে লাদাখ এবং জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুলা কেন্দ্রে। পঞ্চম দফার ভোটে দেশে নজরকাড়া প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছেন রাহুল গান্ধী (রায়বরেলী), স্মৃতি ইরানি (অমেঠী), রাজনাথ সিংহ (লখনউ), ওমর আবদুল্লা (বারামুলা)। রাজ্যে এই তালিকায় রয়েছেন লকেট চট্টোপাধ্যায় (হুগলি), রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (হুগলি), অর্জুন সিংহ (ব্যারাকপুর), পার্থ ভৌমিক (ব্যারাকপুর), কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (শ্রীরামপুর), শান্তনু ঠাকুর (বনগাঁ)। পঞ্চম দফার ভোটে দেশে এবং রাজ্যে ভোটগ্রহণের হার বৃদ্ধি পায় কি না, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে কি না, সে দিকে আমাদের সজাগ নজর থাকবে।
সাত আসনে ভোটগ্রহণ বাংলায়
সোমবার পঞ্চম দফার ভোট দেশ জুড়ে। পঞ্চম দফায় পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ভোট হবে মোট সাতটি আসনে। বনগাঁ, ব্যারাকপুর, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, শ্রীরামপুর, হুগলি এবং আরামবাগে হবে ভোটগ্রহণ। সাত কেন্দ্র মিলিয়ে বেশ কয়েক জন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। তার মধ্যে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন সিংহ, পার্থ ভৌমিক, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যতম। পঞ্চম দফার ভোটে সাতটি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা এক কোটি ২৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৭০২ জন। এঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৩ লক্ষ ৫১ হাজার ৩২০ জন। মহিলা ভোটার ৬১ লক্ষ ৭২ হাজার ৩৪ জন। মোট ১৩ হাজার ৫৮১টি বুথে ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে স্পর্শকাতর বুথ ৭৭১১টি। রাজ্যের পঞ্চম দফায় সাত কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ৬৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। আগে ৬১৩ কোম্পানি বাহিনী মোতায়েনের কথা থাকলেও রাজ্যের সাত কেন্দ্রের জন্য পরে আরও ৩৭ কোম্পানি বাহিনী বাড়িয়েছে কমিশন।
দিল্লিবাড়ির লড়াই: শেষ দু’দফার প্রচার
মোদীর জোড়া সভা বাংলায়
রবির পর সোমবারেও বাংলায় নির্বাচনী সভা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। আজ দু’টি জনসভা করবেন তিনি। তমলুক এবং কাঁথি লোকসভাকে নিয়ে একটি সভা রয়েছে মোদীর। তমলুকের বিজেপি প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবংকাঁথির প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারীর সমর্থনে তাঁর সভা করার কথা। মোদীর অন্য সভাটি হবে ঝাড়গ্রামে। বিজেপি প্রার্থী প্রণত টুডুর সমর্থনে হবে ওই সভাটি। ওই দুই সভা থেকে মোদী কী বলেন আজ সে দিকে নজর থাকবে। অন্য দিকে, আজ এ রাজ্যে ভোটের প্রচারে আসছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। এখানে তাঁর চারটি কর্মসূচি রয়েছে। বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁর সমর্থনে বিষ্ণুপুরে সভা করবেন তিনি। হিমন্ত যাদবপুরে সভা করবেন বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে। তিনি দক্ষিণ কলকাতার বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরীর সমর্থনে ঠাকুরপুকুরে রোড শো করবেন। এ ছাড়া তাঁর আরও একটি রোড শো রয়েছে উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের সমর্থনে।
একাধিক সভা মমতারও
পঞ্চম দফা ভোটের দিনে জোড়া প্রচারসভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনেই তাঁর কর্মসূচি রয়েছে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়ার সঙ্গে লড়াই বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের। রবিবারই অগ্নিমিত্রার সমর্থনে সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর ঠিক তার এক দিন পরেই মেদিনীপুর লোকসভা প্রচার করবেন মমতা। এর পর মুখ্যমন্ত্রীর আরও একটি সভা হওয়ার কথা বিষ্ণুপুর লোকসভা এলাকায়। বিষ্ণুপুর লোকসভা এলাকার ওন্দা বিধানসভা এলাকায় এই সভাটি হবে। এই কেন্দ্রে বিদায়ী সাংসদ বিজেপির সৌমিত্র খাঁর বিরুদ্ধে লড়াই তৃণমূলের সুজাতা খাঁর।
কমিশনের শো-কজ়: জবাব দেবেন অভিজিৎ
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে করা তাঁর ‘কুমন্তব্যে’র জন্য তমলুকের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে শো-কজ় করেছিল নির্বাচন কমিশন। সোমবার সেই শো-কজ়ের জবাব দেওয়ার শেষ দিন। আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিজিৎ জানিয়েছিলেন, তিনি কমিশনের শো-কজ়ের জবাব দিতে প্রস্তুত। যা ঘটেছিল, তা-ই বলবেন। কমিশনকে পাঠানোর জন্য জবাব ‘ড্রাফ্ট’ (খসড়া)ও করে ফেলেছেন। এখন দেখার কমিশনকে পাঠানো সেই জবাবে কী জানালেন প্রাক্তন বিচারপতি।
ঝড়বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস: সোমবার থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই ঝড়বৃষ্টি শুরু হবে। চলতে পারে বুধবার পর্যন্ত। পাশাপাশি, দক্ষিণবঙ্গের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমানে দমকা হাওয়া বইতে পারে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে। বজ্রপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। সোমবার উত্তরবঙ্গে ঝড়বৃষ্টি হলেও তার পরিমাণ দক্ষিণবঙ্গের থেকে কম হবে। চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত।
সন্দেশখালির পরিস্থিতি বিতর্ক
সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে তপ্ত রাজনীতির ময়দান। রবিবারেও বাংলা সফরে এসে সন্দেশখালিকাণ্ড নিয়ে তৃণমূলকে একহাত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাল্টা প্রায় প্রতিটি জনসভা থেকেই সন্দেশখালি নিয়ে বিজেপির ‘ষড়যন্ত্রের’ কথা বলছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যে শনিবারই দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন সন্দেশখালির বিজেপি নেত্রী পিয়ালি দাস ওরফে মাম্পি। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, মমতার সরকারের শেষ দেখে ছাড়বেন। বসিরহাট লোকসভায় তৃণমূলকে হারাবেন। অন্য দিকে, হাই কোর্টে বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের মামলারও শুনানি হওয়ার কথা। সব মিলিয়ে সন্দেশখালির ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর থাকবে সোমবার।
আপ-কেজরী-স্বাতী বিতর্ক
‘জেল ভরো’ বনাম ‘অপারেশন ঝাড়ু’। স্বাতী মালিওয়াল সংক্রান্ত বিতর্কে সম্মুখসমরে বিজেপি। রবিবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরের সামনে ‘জেল ভরো’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন কেজরীওয়াল। সেই কর্মসূচি শুরুর আগে কেজরীওয়াল বিজেপি সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন। দাবি করেন যে, ‘অপারেশন ঝাড়ু’র মাধ্যমে আপ নেতাদের গ্রেফতার করবে বিজেপি। তার পরেও অবশ্য তাঁর দলকে দমানো যাবে না বলে জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। অন্য দিকে, রবিবার আদালতে দিল্লি পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, কেজরীর বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিকৃত করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমার। এই বিতর্কের জল কত দূর এগোয়, সে দিকে নজর থাকবে।
কেকেআর: আইপিএল প্লে-অফের প্রস্তুতি
কাল আইপিএলের প্লে-অফে খেলতে নামছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থেকে শেষ করেছে কেকেআর। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে খেলতে হবে কলকাতাকে। আমদাবাদে খেলা। জিতলে সরাসরি ফাইনালে চলে যাবে নাইটেরা। হারলে আরও একটি সুযোগ থাকছে কেকেআরের।