—প্রতীকী ছবি।
বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যে নিজেদের সামাজিক প্রভাব বাড়াতে পরিকল্পনা করছে সঙ্ঘ। সূত্রের খবর, সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত গোপনীয়তায় মোড়া দু’দিনের বঙ্গ সফরে এসে এই নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন কেশব ভবনের কর্তাদের। সেই লক্ষ্যেই আগামী ১৯ ও ২০ অগস্ট কলকাতার কেশব ভবনে বসতে চলেছে সেই বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির। সেখানে প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দিতে পারেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের সর্বভারতীয় ইংরেজি মুখপত্রের সম্পাদক প্রফুল্ল কেতকর।
এপ্রিল থেকে জুলাই মাসের মধ্যে সারা দেশে সঙ্ঘের শিক্ষা শিবির চলে। বাংলায় মে ও জুন মাসে দক্ষিণ প্রান্তের তাঁতিবেড়িয়া, গোপালী, মধ্য প্রান্তের বাঁকুড়া ও কাশিমবাজার এবং উত্তর প্রান্তের রায়গঞ্জে এই শিক্ষা শিবির হয়েছিল। সেই শিবিরে প্রত্যাশিত সাফল্য মেলার দাবি করেছিলেন বঙ্গের সঙ্ঘ প্রান্ত প্রচারপ্রমুখেরা। এর পরেই সঙ্ঘের শীর্ষ নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন কলকাতা, দিল্লি, বেঙ্গালুরু-সহ চার জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র বৈঠক হবে। ভাগবত এবং সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসেবল সেখানে উপস্থিত থাকবেন। সেই মতো ১২ ও ১৩ অগস্ট বঙ্গ সফরে আসেন ভাগবত। বিহার ও ঝাড়খণ্ড নিয়ে বিহার ক্ষেত্র, অসম ও উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি নিয়ে অসম ক্ষেত্র ও বাংলা, সিকিম, ওড়িশা ও আন্দামান নিয়ে বাংলা ক্ষেত্র— এই তিন ক্ষেত্রের বৈঠক হয় কলকাতায়। সামাজিক ক্ষেত্রে সঙ্ঘের প্রভাব যাতে আরও বাড়ানো যায়, সেই দিকে নজর দিতে বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন ভাগবত।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বিজেপির রাজনৈতিক সুবিধা লাভের উর্বর ক্ষেত্র প্রস্তুতে সঙ্ঘের নেপথ্য ভূমিকা থাকে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে আসন বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলা, ওড়িশা ও তেলঙ্গানাকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি। তাই লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে বিশেষ করে এই রাজ্যগুলিতে সঙ্ঘের সামাজিক প্রভাব বাড়ানোই এখন নাগপুরের লক্ষ্য বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।
প্রশিক্ষণ শিবিরে চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সঙ্ঘ সূত্রের খবর, গ্রাম বিকাশ, মহিলা উন্নয়ন, জনজাতি উন্নয়ন ও কৃষি বিকাশ। মূলত এই চারটি বিষয়ের উপরে যাতে আরও গভীরে গিয়ে কাজ করা যায়, সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। দু’দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে সারা বাংলার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। প্রশিক্ষক হিসেবে কেতকর ছাড়াও আরএসএসের সর্বভারতীয় নেতা রাম দত্ত চক্রধর ও অখিল ভারতীয় প্রচার প্রমুখ সুনীল আম্বেকরের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। যদিও আরএসএস এই প্রশিক্ষণ শিবিরের পিছনে কোনও ‘রাজনৈতিক কৌশল’ নেই বলেই দাবি করেছে। সঙ্ঘের দক্ষিণ বঙ্গ প্রান্ত প্রচারপ্রমুখ বিপ্লব রায় বলেন, ‘‘সঙ্ঘ প্রায় ১০০ বছর ধরে সামাজিক কাজ করে আসছে। একমাত্র লক্ষ্য সমাজে প্রভাব বাড়ানো।”