প্রতীকী ছবি।
রেলে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে এ বার নতুন পথে পা বাড়াচ্ছে রেল। রেলের খবর, যে কোনও দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয় এবং প্রতিকার খোঁজার ক্ষেত্রে ফিশবোন ডায়াগ্রাম বা জাপানের ইশিকাওয়া মডেলের প্রয়োগ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ‘ফাইভ হোয়াই’ বিশ্লেষণও বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিয়েছে রেল বোর্ড। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশেই এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে।
রেলের কর্তাদের বক্তব্য, এই দু’টি পদ্ধতিই জাপানের উদ্ভাবিত এবং শিল্প ক্ষেত্রের যে কোনও দুর্ঘটনা এবং বিপত্তি অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে স্বীকৃত। এই পদ্ধতির প্রয়োগের ফলে যে কোনও বিপত্তির মূল কারণ নির্ণয় এবং প্রতিকার বিধানের কাজ আগের চেয়ে অনেক সহজসাধ্য হবে।
একাধিক সম্ভাব্য কারণের মধ্যে মূল কারণটিকে পৃথক করে সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ এর ফলে ত্বরান্বিত হবে বলেও আশা রেল কর্তাদের। সাধারণ ভাবে, রেলে যে কোনও বড় দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির (সিআরএস) উপরে তদন্তের ভার বর্তায়। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রকের অধীনস্থ ওই সংস্থা স্বাধীন ভাবে কাজ করে। ওই সংস্থার তদন্তের পরে যে সব সম্ভাব্য কারণ উঠে আসে তার ভিত্তিতেই সমস্যার প্রতিকার বিধানের সুপারিশ করা হয়।
রেলকর্তারা জানান, ফিশ বোন ডায়াগ্রাম বা ইশিকাওয়া মডেলে যন্ত্র, উপকরণ, মানুষ, পরিবেশ-সহ নানা ক্ষেত্রের পারস্পরিক প্রভাবের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ঘটনার মূল কারণটিকে নির্ধারণ করার চেষ্টা করা হয়। মাছের শরীরে একাধিক কাঁটা তার শিরদাঁড়ার সঙ্গে যুক্ত থাকে। কাঁটাগুলিকে সমস্যার উপসর্গ বা পারিপার্শ্বিক
কারণ হিসেবে ধরলেও সমস্যার মূল কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটিই থাকে। ওই মডেলে মাছের মাথায় উঠে আসা ফলাফলকেই সমস্যা বা বিপত্তির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। নির্ভুল বিশ্লেষণের মাধ্যমে সেই কারণ নির্ণয় করাই ওই মডেলের উদ্দেশ্য।
একই ভাবে 'ফাইভ হোয়াই' বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সমস্যা বা বিপত্তির পরিণাম সূচক কোনও একটি ঘটনা থেকে পরপর প্রশ্নের মাধ্যমে মূল কারণে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হয়। ওই পর্বে পাঁচের বেশি ধাপও থাকতে পারে। দু’টি ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ সঠিক হলে একাধিক সম্ভাব্য কারণের মধ্যে একটিকে নির্ণয় করা সম্ভব। আধুনিক পদ্ধতির ওই বিশ্লেষণে আধিকারিকদের অভ্যস্ত করে তুলতে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার কথাও জানিয়েছে রেল। সে জন্য বরোদায় ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব ইন্ডিয়ান রেলে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।