TMC Delhi Dharna

‘দিল্লি চলো’ এখনও ছ’দিন বাকি, সময় থাকতেই সুর চড়ানো শুরু তৃণমূলের, কী ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা?

দিল্লি অভিযানের আগে ৫০ লাখ চিঠি পৌঁছে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের দফতরে। ঘোষণা করেছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তা শুরুও করে দিল তৃণমূল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:৩১
Share:

চিঠিরা দিল্লি যাওয়ার অপেক্ষায়। ছবি: এক্স

‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচি নিয়ে তৈরি হচ্ছে তৃণমূল। মঙ্গলবার সেই প্রস্তুতির আরও এক ধাপের ছবি প্রকাশ করা হল সমাজমাধ্যমে। নেতা-সমর্থকেরা আগামী সপ্তাহে দিল্লিতে বিক্ষোভ দেখাতে যাবেন। তার আগে বাংলা থেকে লাখ লাখ চিঠি দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিতে তৈরি। গন্তব্য কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দফতরও। গিরিরাজ সিংহের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর কাছেও তৃণমূলের তরফে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাবদ আটকে থাকা রাজ্য সরকারের প্রাপ্য অর্থ আদায়ের দাবি।

Advertisement

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন। রাজ্যের প্রাপ্য নিয়ে দাবি জানাতে দিল্লি যাওয়ার ঘোষণা করেছিলেন গত ২১ জুলাই। কর্মসূচি আগামী ২ অক্টোবর, সোমবার। ঠিক এক সপ্তাহ আগে মঙ্গলবার থেকেই সেই কর্মসূচির চূড়ান্ত পর্যায়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল। তাতে অংশ নিয়েছেন স্বয়ং অভিষেক। দিল্লিতে ৫০ হাজার চিঠি পাঠানোর ছবি মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ দলের এক্স (পূর্বতন টুইটার) হ্যান্ডেলে প্রকাশ করে তৃণমূল। এর ঘণ্টাখানেক পরে সেই পোস্টটি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করেন অভিষেক। সঙ্গে লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে এককাট্টা, আমাদের নায্য প্রাপ্য আদায়ের বিষয়ে মনস্থির করে ফেলেছে। গণতন্ত্রে মানুষের শক্তিই সর্বোচ্চ।’’ এর পরে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ নামের এক্স হ্যান্ডেল থেকেও একটি টুইট করা হয়েছে। তাতে বান্ডিল বান্ডিল চিঠির ভিডিয়ো প্রকাশ করে লেখা হয়েছ, ‘‘দিল্লিতে পৌঁছবে বাংলার গর্জন: হকের টাকা ফেরত চাই এখনই!’’

অভিষেক আগেই জানিয়েছিলেন, রাজ্যের ১০০ দিনের কাজ করে যাঁরা টাকা পাননি তাঁদের দাবি পৌঁছে দেওয়া হবে কৃষি ভবনে। পরে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছিলেন, ৫০ লাখ চিঠি পৌঁছে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর দফতরে। সেই মতো ৫০ লাখ চিঠি তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে মঙ্গলবার দাবি করেছে তৃণমূল। জানানো হয়েছে ওই চিঠি পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মসূচির জন্য ১ অক্টোবর দিল্লি পৌঁছে যাবেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গেই এই চিঠি পৌঁছবে রাজধানীতে। দিল্লি যাবেন অভিষেকও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও যাওয়ার কথা ছিল। তবে স্পেন সফরে গিয়ে পায়ে চোট পাওয়ায় চিকিৎসকেরা ১০ দিন তাঁকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। ফলে মমতার দিল্লি যাওয়া আপাতত অনিশ্চিত। ২ অক্টোবর গান্ধীজয়ন্তীতে রাজঘাটে প্রার্থনা এবং পরের দিন দিল্লির যন্তর মন্তর চত্বরে ধর্নায় বসতে চলেছে তৃণমূল। ওই দিনই যন্তর মন্তর থেকে মিছিল করে অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা যাবেন কৃষি ভবনে। একই দিনই প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠিগুলি দেওয়া হবে বলেই তৃণমূল সূত্রে খবর। ৩ অক্টোবর তৃণমূলের তরফে গিরিরাজের কাছে সময় চাওয়া হয়েছে। তৃণমূল সংসদীয় দলের তরফে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে। পাশাপাশি, তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আলাদা করে সংসদের বিশেষ অধিবেশনের সময় গিরিরাজকে সময় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সুদীপকে গিরিরাজ জানিয়েছেন, বিজেপি নেতৃত্ব তাঁকে ছত্তীসগঢ় বিধানসভা নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছে। তাই ওই দিন তাঁকে ছত্তীসগঢ়েই থাকতে হবে।

মন্ত্রী এমনটা জানালেও, নিজেদের কর্মসূচিতে অনড় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই ৩ অক্টোবর ৫০ লাখ চিঠি এ বার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার বকেয়া ১৫ হাজার কোটি টাকা-সহ রাজ্য সরকারের প্রতি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একাধিক চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সুরাহা হয়নি বলেই অভিযোগ তৃণমূল নেতৃত্বের। তাই এ বার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর ঠিকানাতেই বাংলার মানুষের দাবি পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের একটি সূত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement