সমীক্ষা বলছে, এখন নির্বাচন হলে রাজ্যে তৃণমূল পেতে পারে ৩৮.৫০% ভোট। —ফাইল চিত্র।
করোনা ও ‘আমপান’ পরবর্তী পরিস্থিতির মধ্যে এই মুহূর্তে রাজ্যে বিধানসভা ভোট হলে ক্ষমতায় ফিরতে পারে তৃণমূলই, এমন ইঙ্গিত উঠে এল সিএনএক্স-এবিপি আনন্দের জনমত সমীক্ষায়। তবে সমীক্ষার আভাস বলছে, শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যেই পড়তে হবে শাসক দলকে। তৃণমুল যেখানে ১৫৫ থেকে ১৬৩টি বিধানসভা আসন পেয়ে ক্ষমতা দখলে রাখতে পারে, সেখানে বিজেপি পেতে পারে ৯৭ থেকে ১০৫টি আসন। আর বাম-কংগ্রেস জোটের ঝুলিতে যেতে পারে ২২ থেকে ৩০টি আসন। পাশাপাশি, এই সমীক্ষাতেই উঠে এসেছে, ‘আমপান’-এর পরে কলকাতায় সাম্প্রতিক বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জন্য রাজ্য সরকার এবং সিইএসসি, উভয়কেই দায়ী করছেন ৮১% উত্তরদাতা।
জনমত সমীক্ষার ফল অনেক সময়েই ভোটের প্রকৃত ফলাফলের সঙ্গে মেলে না। তবে মানুষের মনোভাবের আভাস দিতে এই ধরনের সমীক্ষার কার্যকারিতা অস্বীকার করেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। এ বারের সমীক্ষা বলছে, এখন নির্বাচন হলে রাজ্যে তৃণমূল পেতে পারে ৩৮.৫০% ভোট এবং বিজেপির দিকে যেতে পারে ৩২.৭৪% ভোট।
তবে এই সমীক্ষা অনুযায়ী, কোনও দলকে সমর্থনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি ৯.৫৩% উত্তরদাতা। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, এই অংশের ভোট শেষ পর্যন্ত কোন দিকে যাবে, তার উপরে অনেক সমীকরণ নির্ভর করছে। এই অংশের সিংহভাগের সমর্থন তৃণমূলের দিকে গেলে তারা নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেতে পারে, বিজেপির দিকে গেলে সরকার গড়ার খেলা উল্টে যেতে পারে। আবার তৃতীয় পক্ষ বাম ও কংগ্রেসের দিকে ওই সমর্থনের বড় অংশ ঘুরে গেলে বিধানসভার সম্পূর্ণ অন্য রকম ছবি উঠে আসতে পারে। সিদ্ধান্ত না নেওয়া এই অংশটিকে তাই গুরুত্বপূর্ণই মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
আরও পড়ুন: রাজ্য মন্ত্রিসভায় কিছু দফতরের দায়িত্ব রদবদল!
রাজ্যে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের নিরিখে ধরলে তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেসের আসন এই সমীক্ষা অনুযায়ী কমছে। বাড়ছে বিজেপির আসন। আবার গত বছরের লোকসভা নির্বাচনের (রাজ্যে ১৮টি আসন জিতেছিল বিজেপি)হিসাবে দেখলে গেরুয়া শিবিরের আসন কিছু কমছে। তৃণমূলের আসন প্রায় একই থাকছে। আবার লোকসভা ভোটের নিরিখে কিছু আসন বাড়ছে বাম-কংগ্রেসের।
আরও পড়ুন: কলকাতার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কী বাড়ছে? কন্টেনমেন্ট জোন থেকেও রক্তের নমুনা সংগ্রহ
সাম্প্রতিক পরিস্থিতির উপরে কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল এই সমীক্ষায়। উত্তরদাতাদের কাছ থেকে থেকে উল্লেখযোগ্য যা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তার মধ্যে আছে ‘আমপান’-এর পরে বিদ্যুৎ সঙ্কটের কথা। কলকাতায় উদ্ভুত বিদ্যুৎ সঙ্কটের জন্য রাজ্য সরকার এবং সিইএসসি উভয়েই দায়ী, এমন মত দিয়েছেন উত্তরদাতাদের ৮১%। করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যের ভূমিকা সন্তোষজনক মনে করছেন ৪০%, সন্তোষজনক নয় বলছেন ৪৯% উত্তরদাতা। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রাজ্যে কোয়রান্টিন ব্যবস্থা আরও ভাল করা উচিত ছিল মনে করছেন ৬১% উত্তরদাতা। আবার লকডাউন করে করোনা সংক্রমণ রুখতে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ব্যর্থ হয়েছে, এমন মত ৬১% উত্তরদাতারই।