নাম না করেও নিয়োগ দুর্নীতিতে বিরোধী দলনেতার দিকেই অভিযোগের আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। — ফাইল চিত্র।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার খেজুরিতে প্রশাসনিক সভা থেকে শুভেন্দুকে আক্রমণ করেছিলেন মমতা। আর মঙ্গলবার দিঘায় দলের কর্মী সম্মেলনেও সেই একই পথে হাঁটলেন তিনি। নাম না করেও বড় অভিযোগ তুললেন। মমতা জানান, তাঁর অজান্তেই বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদহের চাকরি অন্য জেলায় বিক্রি হয়েছে। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কারও হাত দিয়ে চাকরিগুলো দিয়েছিলাম, আর সেই চাকরিগুলো অনেক জায়গায় বিক্রি করেছিল, এটা আমরা জানতাম না।’’
মুখ্যমন্ত্রী একটি বারের জন্যও শুভেন্দুর নামোচ্চারণ করেননি। তবে তৃণমূলে থাকার সময়ে মমতার উল্লেখ করা জেলাগুলির সাংগঠনিক দায়িত্ব দীর্ঘ সময় শুভেন্দুর হাতেই ছিল। তাই মনে করা হচ্ছে, নাম না করেও নিয়োগ দুর্নীতিতে বিরোধী দলনেতার দিকেই অভিযোগের আঙুল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী।
এখন নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে স্পষ্টতই চাপে তৃণমূল এবং রাজ্য সরকার। মন্ত্রী, বিধায়ক-সহ বিভিন্ন স্তরের তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করেছে ইডি বা সিবিআই। তাঁদের অনেককে দল থেকে বহিষ্কারও করেছে তৃণমূল। এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূল সম্প্রতি বাম জমানার নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছিল বলে সরব হয়েছে। ‘চিরকুটে চাকরি’-র অভিযোগ তুলে বামেদের আক্রমণের মধ্যেই নতুন কথা শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি জানান, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলার চাকরি অন্যত্র বিক্রি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় চাকরি দেওয়া হয়নি। পুরুলিয়ার চাকরি এখানে বেচে দেওয়া হয়েছিল। আজকে সিবিআই- ইডিকে নিয়ে এসে বড় বড় কথা বিজেপি নেতাদের।’’ এখানেই না থেমে মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূলের কর্মীদের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘‘এটা সত্যি ঘটনা কি না মেদিনীপুরের মানুষ বলুন।’’
সোমবারও শুভেন্দুর নাম না করে আক্রমণ করেছিলেন মমতা। তবে সেটা ছিল নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গে। খেজুরিতে বলেছিলেন, ‘‘নন্দীগ্রামে যখন সূর্যোদয় হয়েছিল, তখন গদ্দাররা মাঠে ছিল না। আমি প্রথম ছুটে এসেছিলাম! যারা আমাদের থেকে সব নিয়ে এখন বড় বড় কথা বলছে, তাদের উদ্দেশে একটাই কথা বলব। ঈশ্বর-আল্লা তেরো নাম, সব কো সুমতি দে ভগবান।’’ মমতা সাধারণত শুভেন্দুর নাম নেন না। তিনি বিরোধী দলনেতাকে সাধারণত ‘গদ্দার’ বলেই সম্বোধন করে থাকেন। অতএব খেজুরির বক্তব্যে মমতা যে ‘গদ্দার’ বলতে শুভেন্দুকেই বুঝিয়েছেন, তা সহজেই অনুমেয়। আর শুভেন্দুও সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় তাঁর সমাবেশ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, খেজুরিতেই তিনি মমতার চেয়ে বড় জনসভা করে দেখিয়ে দেবেন।