ইডি আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয়দের। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির ঘটনায় ইডিরই প্ররোচনা দেখছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসকদলের বক্তব্য, তাদের বেইজ্জত করতে বিজেপির নির্দেশে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তদন্তের নামে প্ররোচনা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। তারই ফলশ্রুতি শুক্রবার সকালের ওই ঘটনা বলে মত তাদের।
শুক্রবার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দিতে গিয়ে স্থানীয়দের রোষের মুখে পড়ে ইডি। মাথা ফাটে এক ইডি আধিকারিকের। মারমুখী জনতার চাপে পিছু হটতে হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির আধিকারিকদের। সন্দেশখালির বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। বেশ কয়েকটি রাস্তায় কাঠের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করা হয়। এই ঘটনায় রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হতেই মুখ খোলে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “সন্দেশখালির ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু শুধু তৃণমূলকে বেইজ্জত করবে বলে বিজেপির নির্দেশে কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তল্লাশির নামে প্ররোচনা দিচ্ছে।” এটি ধারাবাহিক ঘটনায় পরিণত হয়েছেন বলেও দাবি করেন কুণাল।
বিজেপির উদ্দেশেও আক্রমণ শানিয়েছেন কুণাল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে ‘রেজিস্টার্ড চোর’ বলে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “বিজেপি নেতাদের বাড়ি তল্লাশি হয় না। কিন্তু যেখানেই বিজেপি সংগঠনে পাল্লা দিতে পারছে না, সেই জায়গায় গিয়ে গিয়ে সাধারণ মানুষকে প্ররোচিত করা হচ্ছে, গন্ডগোল তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।” সন্দেশখালির ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয় বলে দাবি করেন কুণাল। এর পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও প্ররোচনায় পা না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
সন্দেশখালিতে ঘটনার সূত্রপাত হয় শুক্রবার সকালে। রেশন বণ্টন দুর্নীতির মামলায় তদন্তের সূত্রে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। তবে সেই বাড়ি তালাবন্ধ ছিল। অনেক ক্ষণ ডাকাডাকির পরেও কারও সাড়া মেলেনি। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর সেই বাড়ির তালা ভাঙার চেষ্টা করেন ইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। সেই সময়েই বেশ কয়েক জন স্থানীয় ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। তাঁরা নিজেদের তৃণমূল নেতার অনুগামী পরিচয় দিয়ে ইডি আধিকারিকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জনওয়ানদেরও ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে স্থানীয়দের একাংশের বিরুদ্ধে। তার পর ইডি আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যান। তবে তার পরেও থামেনি বিক্ষুব্ধ জনতা। ইট-পাটকেল হাতে রাস্তায় নামেন বেশ কয়েক জন। বেশ কয়েকটি রাস্তা অবরোধ করা হয়। ইডি সূত্রে খবর, আপাতত বাসন্তী হাইওয়েতে একটি ‘নিরাপদ জায়গা’য় গাড়ির মধ্যে রয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের ঘিরে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা।