বিদায়: কে পি সিংহদেও।
প্রয়াত হলেন পুরুলিয়ার তৃণমূল পুরপ্রধান কে পি সিংহদেও। শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় পুরুলিয়া শহরের রাঁচী রোডের বাঁশবাংলোর বাড়িতে তিনি দেহ রাখেন। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, গত কয়েকমাস ধরে তিনি প্যাংক্রিয়াটিক ক্যান্সারে ভুগছিলেন। তাঁর মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পরেই শোকজ্ঞাপন করতে তাঁর বাড়িতে আসেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা। তাঁর দাদা বিজেপি নেতা বিপি সিংহদেও বলেন, ‘‘ক’দিন ধরেই ঠিক মতো খেতে পাচ্ছিল না। সন্ধের পর থেকেই ওর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ডাক্তারকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।’’
পঞ্চকোট রাজ পরিবারের সন্তান কামাক্ষ্যাপ্রসাদ সিংহদেওকে রাজ্যের মানুষ কেপি সিংহদেও নামেই চিনতেন। তাঁর বাবা অজিতপ্রসাদ সিংহদেও কংগ্রেসের বিধায়ক ছিলেন। কাকা শঙ্করনারায়ণ সিংহদেও ছিলেন ওই দলের বিধায়ক এবং সাংসদ। ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের রাজকুমার কলেজ থেকে স্কুল শেষ করে কলকাতায় সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে স্নাতক হন। আশির দশকে এনভিএফ-র সাম্মানিক কমান্ড্যান্টের দায়িত্ব সামলে তাঁর কংগ্রেসে প্রবেশ।
বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ১৯৮২ সালে, আড়শা কেন্দ্র থেকে। যদিও তিনি ভোটে জিততে পারেননি। বিভিন্ন সময়ে তিনি মানবাজার, আড়শা, পুরুলিয়া কেন্দ্র থেকে বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন। তবে প্রথম জেতেন ২০১১ সালে পুরুলিয়া কেন্দ্রে বিধানসভা ভোটে। সে বার জেলায় যতগুলি আসনে তৃণমূল জিতেছিল, তারমধ্যে কেপি সর্বাধিক ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। ২০১৫ সালে পুরুলিয়া শহরে যখন তৃণমূলের তরী ডোবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন দল তাঁকে পুরপ্রধান হিসেবে তুলে ধরে পুরনির্বাচনে নামিয়ে দেয়।
একসময় তিনি ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বে। সে কথা স্মরণ করে বর্তমান জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘কেপিদার হাত ধরেই তো আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম।’’
২০০০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন। তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলের দুর্দিনের সময় কেপিদা বুক আগলে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’’
তিনি বর্তমানে পুরুলিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পদে ছিলেন। দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘শুধু তৃণমূলের নয়, পুরুলিয়ার রাজনৈতিক ক্ষতি হয়ে গেল।’’