TMC MP Mahua Moitra And TMC MLA Manik Bhattacharya

‘ও চোর, ওর চোদ্দোগুষ্টি চোর’! মানিকের বিধানসভা এলাকায় ভরা সভা থেকে বেনজির আক্রমণে মহুয়া

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র জানান, তিনি কখনও কারও উদ্দেশে এমন কথা বলেন না। কিন্তু এ বার বাধ্য হচ্ছেন। কারণ, কয়েক জনের জন্য দল কালিমালিপ্ত হয়েছে। এমনকি, সরকার ‘পড়ে’ যাওয়ার জোগাড় হয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:১৯
Share:
Mahua Moitra

মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।

দলের বিধায়কের বিধানসভা এলাকায় গিয়ে তাঁর নাম না করে ‘চোর’, ‘ডাকাত’ বলে আক্রমণ শানালেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা নদিয়া জেলার তৃণমূল সভানেত্রী মহুয়া মৈত্র। যাঁর নাম-না করে মহুয়ার এই বিষোদ্গার বলে মনে করা হচ্ছে, সেই মানিক ভট্টাচার্য খেদের সুরে বলেন, ‘‘এত দিন বিজেপি, সিপিএম ওই কথা বলছিল, আজ আরও এক জন যোগ হল!’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান এ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দিতে চাননি।

Advertisement

বুধবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিকের বিধানসভা এলাকার বার্নিয়া অঞ্চলে একটি কর্মিসভায় উপস্থিত ছিলেন মহুয়া। সেখান থেকে নাম না করে পলাশিপাড়ার বিধায়ককে বেনজির আক্রমণ শানান তিনি। তৃণমূল সাংসদ নিজেই জানান, এর আগে কাউকে এমন কথা বলেননি। কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘যার জন্য দল কালিমালিপ্ত হয়েছে, যার জন্য সরকার প্রায় পড়ে গিয়েছে, আজ অবধি কেস চলছে, এফআইআর হয়েছে, চার্জশিট হয়ে গিয়েছে, তারা ভোটের আগে এলাকায় ঢুকবে, মিটিং করবে! আমাদের তা-ই মেনে নিতে হবে? আমরা কি মরে গিয়েছি?’’ সভায় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের দিকে প্রশ্ন ছোড়েন মহুয়া। বলেন, ‘‘কী মনে হয় আপনাদের? আমি এগুলো বলি না, কোনও দিন বলি না। আজ বাধ্য হয়ে বলছি। যারা দলকে কালিমালিপ্ত করেছে, এরা ডাকাত, রঘু ডাকাত।’’

সেখানেই থামেননি মহুয়া। তিনি বলে চলেন, ‘‘এরা ছিঁচকে চোর নয়, পকেটমার নয়, ওর বৌ চোর, ছেলে চোর, চোদ্দোগুষ্টি চোর।’’ কর্মীদের উদ্দেশে আবার প্রশ্ন ছুড়ে মহুয়া বলেন, ‘‘আমি কি বার্নিয়ার বুকে স্টেজে দাঁড়িয়ে মিটিং করে মিথ্যা কথা বলতে এসেছি? বাস্তব কথাই বলছি। এই দলের আমি সৈনিক। মমতা ব্যানার্জির সৈনিক। এই দুটো-তিনটে চোর-ডাকাতের জন্য আমাদের সকলকে কালিমালিপ্ত করছে (মানুষ)।’’

Advertisement

এক সময় জেলা সভানেত্রী তথা সাংসদ মহুয়ার মৈত্রের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কৃষ্ণনগর লোকসভা এলাকার ছয় তৃণমূল বিধায়ক। সেই ‘বিক্ষুব্ধ’দের মধ্যে অন্যতম প্রাথমিকে নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত মানিক। তিনি ছাড়াও মহুয়ার বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ করে দলনেত্রী মমতাকে চিঠি লেখেন বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস, কল্লোল খাঁ, রুকবানুর রহমান, বিমলেন্দু সিংহ রায় এবং সদ্যপ্রয়াত নাসিরউদ্দিন আহমেদ। কালীগঞ্জের প্রয়াত বিধায়ক নাসিরের স্মরণসভা নিয়েও সাংসদ এবং বিধায়কদের দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। কারণ, বিধায়কদের ওই আয়োজনে ডাক পাননি মহুয়া। পরে সাংসদ একটি সভা ডাকেন। সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন মানিকেরা।

বুধবার সাংসদ তথা জেলা সভানেত্রীর এই আক্রমণের প্রেক্ষিতে মানিকের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। কিন্তু প্রথমে তিনি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। পরে জানান, এত দিন যে আক্রমণ তাঁকে বিরোধীরা করে এসেছে, আজ দলের এক জন সেটা করলেন। আর তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান তথা চাপড়ার তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর রহমানের মন্তব্য, ‘‘যিনি বলেছেন, ব্যাখ্যা দেওয়ার দায় তাঁর নিজের।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement