—নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় শাসকদল তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। তবে কোচবিহার জেলায় উলটপুরাণ! গোষ্ঠীকোন্দলের জর্জরিত কোচবিহারে তৃণমূল বড়সড় ভাঙন ধরল। মঙ্গলবার বিজেপিতে যোগদান করলেন তৃণমূলের প্রাক্তন দিনহাটা শহর ব্লক সভাপতি জয়দীপ ঘোষ। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জয়দীপের সঙ্গে শাসকদলের প্রায় ৫০০ জন কর্মীও দলবদল করেছেন বলে দাবি বিজেপির। যদিও জয়দীপের দলত্যাগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ উদয়ন।
কোচবিহার জেলা রাজনীতিতে উদয়নের দীর্ঘকালের ছায়াসঙ্গী বলেও পরিচিতি রয়েছে জয়দীপের। তবে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকে তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক দূরত্ব তৈরি হয় বলে অভিযোগ। তা এক সময় বিরোধে পরিণত হয়েছিল বলেও দাবি। পাশাপাশি, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে এই নেতার। যদিও মঙ্গলবার সে সব সঙ্গই ত্যাগ করেছেন জয়দীপ। তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূলের মধ্যে যে গোষ্ঠীকোন্দল চলছে, তাতে আমাদের মতো সাধারণ কর্মীদের দমবন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কোন গোষ্ঠীর পাশে থাকব আর কার সঙ্গে থাকব না, বুঝে উঠতে পারছিলাম না। জেলার নেতারা যে ভাষায় একে অপরকে আক্রমণ করছেন, তাতেও আমাদের পক্ষে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠছিল।’’
মঙ্গলবার জয়দীপের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায়। জেলা বিজেপির কার্যালয়ে ওই যোগদান পর্বের পর সুকুমার বলেন, ‘‘বেশ কিছু দিন ধরেই জয়দীপ ঘোষের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছিল। জয়দীপ-সহ ৫০০ তৃণমূলকর্মী আজ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করলেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘জেলার বহু জায়গা থেকে অনেকেই বিজেপিতে যোগদান করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। ৬ মে-র পর থেকে লাগাতার যোগদান কর্মসূচি চলবে।’’
দলবদলের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জয়দীপের অভিযোগ, ‘‘উদয়ন গুহ যে হারে দিনহাটায় সন্ত্রাস করছেন!’’ তাঁর দাবি, ‘‘গত উপনির্বাচন এবং পুরসভা নির্বাচনে যে ভাবে সন্ত্রাস হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। ভারতীয় জনতা পার্টিই পারে দিনহাটায় শান্তি ফেরাতে। তাই দিনহাটায় গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করা।’’ যদিও উদয়নের মন্তব্য, ‘‘এ ধরনের বহু জয়দীপ ঘোষ হয়েছে। প্রত্যেকের সব কথার উত্তর দিতে গেলে দিন পেরিয়ে যাবে।’’ রবীন্দ্রনাথও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ।