মমতার দেওয়া নির্দেশ মেনেই দল করবেন। সুব্রত বক্সী ও ফিরহাদ হাকিমকে কথা দিলেন হুমায়ুন কবীর। — ফাইল চিত্র।
হুমায়ুন কবীরকে নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। এ বার সেই হুমায়ুনই জানালেন, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা ঠিক করে দেবেন, তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলবেন তিনি। শনিবার বাইপাসের ধারের তৃণমূল ভবনে মুর্শিদাবাদ জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন দলের দুই শীর্ষনেতা— রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (ববি)। সেখানেই মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের অন্য নেতা-বিধায়কদের সঙ্গে হাজির হন ভরতপুরের বিধায়কও।
হুমায়ুন কি নিজের ‘ক্ষোভ’ দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাতে পেরেছেন? তাঁর কথায়, ‘‘বক্সীদা ও ববিদা আমাকে নেত্রীর দেওয়া নির্দেশিকার কথা বলেছেন। আমাদের সকলকেই সেই নির্দেশিকা মানতে হবে। আমিও ওই নির্দেশিকা মেনেই দল করব।’’ হুমায়ুনের বিদ্রোহী মেজাজের ঝাঁজ শনিবার অনেকটাই কম ছিল। তিনি বলেন, ‘‘যে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা বাইরে বলা যাবে না। সাংগঠনিক আলোচনাই মূলত হয়েছে। কিন্তু কোনও কিছুই প্রকাশ্যে বলার জন্য নয়।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল সভাপতি শাওনি সিংহ রায় ও চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকারের বিরুদ্ধেই হুমায়ুনের মূল ক্ষোভ। তাঁদের বিষয়েও প্রশ্ন করা হলে ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, ‘‘যা বলার দলীয় মঞ্চে বলেছি। বাইরে কিছু বলব না।’’
পঞ্চায়েত ভোটে নিজের অনুগামীদের প্রার্থী করতে না-পারা থেকেই হুমায়ুনের ক্ষোভের সূচনা। সেই সময় জেলা তৃণমূল সভাপতিকে তাঁর কার্যালয়েই ঘেরাও করার ডাক দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঘোষিত সেই কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে আসেন। প্রকাশ্যেই নিজের ক্ষোভের কথা ধারাবাহিক ভাবে জানিয়েও আসছিলেন। এর পর গত ২৯ জুলাই তাঁকে শো-কজ় নোটিস পাঠিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। ৭ দিনের মধ্যে সেই শো-কজ়ের জবাব দিতেও বলা হয়। সোমবার শো-কজ় নিয়ে ফোনে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতির সঙ্গে কথাও হয় হুমায়ুনের। মঙ্গলবার বক্সীর নির্দেশ মেনেই তৃণমূল ভবনে গিয়ে শো-কজ়ের জবাব দিয়ে আসেন তিনি।
শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশেনের শেষ দিনে পুরমন্ত্রী ফিরহাদের ঘরে গিয়ে নিজের দলবিরোধী অবস্থানের জন্য দুঃখপ্রকাশও করেন হুমায়ুন। পরে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘দলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। তা ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বা সুব্রত বক্সীর নেতৃত্বের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’ আর শনিবার মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে পঞ্চায়েত গঠন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৈঠক তলব করে শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখানেই রাজ্য সভাপতি ও পুরমন্ত্রীর মুখোমুখি হন হুমায়ুন। তৃণমূল ভবন সূত্রে খবর, আপাতত সুর নরম করে দলীয় নেতৃত্বের সুনজরে ফিরতে চাইছেন হুমায়ুনও।