(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিক)। —ফাইল ছবি।
লোকসভা ভোটের ফলের ভিত্তিতে সংগঠনে বড় রকমের ‘ঝাড়পোঁছ’ শুরু করছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলে তো বটেই পঞ্চায়েত ও পুরসভা স্তরে দলীয় বোর্ডেও বেশ কিছু রদবদল করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে দল ও প্রশাসন পরিচালনায় ‘পারফরম্যান্সই’ বিচার্য।
লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ও অন্যতম বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছিল। গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব, বিরোধী শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ, নিষ্ক্রিয়তা এবং কাজের কারণে ভাবমূর্তির এই সমস্যা দূর করতে প্রচারের প্রায় সমান্তরাল কাজ করতে হয়েছে দলীয় নেতৃত্বকে। ভোটের সময়ে তাৎক্ষণিক কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এই অবস্থা জিইয়ে রেখে বিধানসভা ভোটে যেতে নারাজ তাঁরা। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘ভোটের সময়ে অনেক রাজনৈতিক বিষয় থাকে। কিন্তু সাংগঠনিক সমস্যা নিয়ে নির্বাচনে গেলে ঝুঁকি থাকে। বিধানসভা ভোটে তা মিটিয়েই আমরা লড়াই করতে চাই।’’
গত পঞ্চায়েত ভোটের পরেই কাজকর্ম নিয়ে দলের সব স্তরে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বোর্ড গঠনের সময় নির্বাচিত সকলকে তিনি জানিয়েছিলেন, কাজ করতে না পারলে সরে যেতে হবে। দলীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই সেই মূল্যায়নের কাজ চলছে। বিধানসভা ভোটের আগে যেখানে যেমন দরকার, তেমন পদক্ষেপ করা হবে। একই ভাবে পুরসভা স্তরেও বেশ কিছু রদবদল করতে পারে তৃণমূল। পুরবোর্ডের কাজে জনমানসে ক্ষোভ থাকলে, তা দূর করতে এই পদক্ষেপ কয়েক মাস আগে থেকেই ভাবনায় রয়েছে।
লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি পর্বেই নিষ্ক্রিয়তা, গোষ্ঠী সূত্রে অন্তর্ঘাত ও বিরোধী শিবিরের সঙ্গে হাত মেলানোর একাধিক ঘটনা দলের নজরে এসেছে। সেই কারণে ভোট চলাকালীন এক মন্ত্রীকে তাঁর এলাকায় সাংগঠনিক কাজ থেকে দূরে রাখা হয়। আরও একাধিক জায়গায় দলের জেলা স্তরের নেতাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও যাঁদের ভূমিকায় দলের ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে। এ ব্যাপারে উপদেষ্টা সংস্থার রিপোর্ট হাতে নিয়েই সিদ্ধান্ত নেবেন দলের নেতারা। উত্তরবঙ্গে কোচবিহার আসনের জয়ের পিছনে বিবদমান নেতাদের উপরে দলের ‘নজরদারি’ ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
লোকসভার ভোট-গণনার দিন বিকেলেই দলকে বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে বলে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককে তৃণমূল নেত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, ২০২৬ সালের ভোটেও ২০০-এর বেশি আসন নিশ্চিত করতে এখন থেকেই নেমে পড়া উচিত। সেই লক্ষ্যেই এই ঝাড়াই- বাছাইয়ে হাত দিচ্ছে তৃণমূল।