প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া হুঁশিয়ারির পরেও ‘রোগ’ কমার লক্ষণ নেই। এ বার মুর্শিদাবাদের ডাঙাপাড়ায় তৃণমূলের এক বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে গ্রামবাসীদের কাছ থেকে ‘কাটমানি’ চাওয়ার অভিযোগ উঠল। ডাঙাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন
হাসানপুরের তৃণমূল নেতা গোলাম কিবরিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে তিনি কয়েক জন গ্রামবাসীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা করে ঘুষ চেয়েছেন। এ নিয়ে জেলা পরিষদে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই গ্রামের চার বাসিন্দা রজব মণ্ডল, তাজিবুর শেখ, জাব্বার শেখ ও মইনুল মণ্ডল।
মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে অভিযুক্ত নেতার বিরুদ্ধে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা গোলাম কিবরিয়া।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অভিযোগকারীরা সকলেই পেশায় দিনমজুর। তাঁদের কারও পাকা বাড়ি নেই। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পেতে স্থানীয় ডাঙাপাড়া পঞ্চায়েতে কয়েক মাস আগে আবেদন করেছিলেন ওই চার জন। গ্রামের অন্য কয়েক জনের নাম সম্প্রতি তালিকায় নাম উঠলেও চার জনের নাম ছিল না। খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, পঞ্চায়েত থেকে পরিদর্শন না-হওয়ায়
বাড়িপ্রাপকের তালিকায় তাঁদের নাম ওঠেনি। রজব, জাব্বার, তাজিবুরদের দাবি, ‘‘এতদিনেও কেন পরিদর্শন হল না, তা জানতে পঞ্চায়েতে গিয়েছিলাম। ওখানে একজন বললেন, স্থানীয় তৃণমূল নেতা গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে দেখা করতে হবে। ওঁর (গোলাম) কাছে গেলে উনি ১০ হাজার টাকা করে চান। এটাও জানিয়ে দেন, টাকা দিলে তবেই নাম উঠবে।’’
মইনুলের দাবি, ‘‘আমায় গোলামদা বললেন, আগে ১০ হাজার টাকা দিবি। তারপর বাড়ির টাকা আসবে। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানলাম, আরও অনেকের কাছে উনি টাকা চেয়েছেন।’’ যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা।
তিনি বলেন, ‘‘চক্রান্ত করে আমার বিরুদ্ধে এ সব রটানো হচ্ছে। এলাকার উন্নয়ন করছি। সেটা অনেকের সহ্য হচ্ছে না।’’
এ নিয়ে লালবাগ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মশরত শেখের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিষয়টি দলের তরফে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ অন্যদিকে, দলের এক শ্রেণির নেতাদের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা চাওয়ার অভিযোগ ওঠায় সম্প্রতি লিফলেট বিলি করে গ্রামবাসীদের ঘুষ না দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে জেলা পরিষদ। দলীয় নেতাদেরও এ নিয়ে সতর্ক করা হয়। সেই হুঁশিয়ারি যে অনেকে শুনছেন না, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ এ দিন তা স্বীকার করেছেন।