ক্ষমা চাওয়ার পরই উলটপুরাণ!
খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অনিরুদ্ধ ঘোড়ইয়ের চেম্বারে গিয়ে মঙ্গলবার হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়েছিলেন অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী প্রিয়াঙ্কা শী। পরদিনই সেই ক্ষমা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে প্রিয়াঙ্কার মন্তব্যে ফের বিতর্ক তৈরি হল।
বুধবার প্রিয়াঙ্কা ফেসবুকে লেখেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে এবং খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে রোগীর পরিষেবা সচল রাখতে আমার দুঃখপ্রকাশ করাটা নিতান্তই সৌজন্য। খড়্গপুরের বাসিন্দাদের সকলেই ডাক্তারবাবুর আচরণ সম্পর্কে অবগত। মানসিকভাবে শান্তি হল যে, ২০০ জন রোগীর সুবিধার জন্য নিজের দোষ না হলেও ক্ষমা চাওয়াতে আমি গর্বিত’। তাঁর এই মন্তব্যের পরই ফের শোরগোল শুরু হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “যদি ফেসবুকে প্রিয়াঙ্কা এমন মন্তব্য করে থাকেন তবে আমরা এ বার চরম সিদ্ধান্ত নেব। দল এ সব প্রশ্রয়
দেবে না।”
ফেসবুকে প্রিয়াঙ্কার সেই পোস্ট।
এর কিছু ক্ষণ পরে অবশ্য প্রিয়াঙ্কার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ওই পোস্টটি (যদিও ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট আমাদের হাতে রয়েছে) দেখা যায়নি। প্রিয়াঙ্কার অবশ্য দাবি, তিনি পোস্টটি মুছে ফেলেননি। কিন্তু এমন পোস্ট করলেন কেন? প্রিয়াঙ্কার জবাব, ‘‘আমি এমন কোনও মন্তব্য ফেসবুকে করিনি যাতে চিকিৎসক আঘাত পান। বরং ফেসবুকে যা লিখেছি তাতে চিকিৎসকের প্রশংসাই করেছি।’’
প্রিয়াঙ্কার ওই মন্তব্যের পর ফের আশঙ্কায় ভুগছেন নিগৃহীত চিকিৎসক অনিরুদ্ধ। তিনি বলেন, ‘‘প্রিয়াঙ্কা শীর মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে উনি অনুতপ্ত নন। বরং পরে প্রতিশোধ নিতে পারেন। তাই পুলিশের পদক্ষেপ করা উচিত।” এ বার প্রিয়াঙ্কার দাবি, ‘‘আমি অনুতপ্ত।” এ দিনই মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব (স্বাস্থ্য) রাজীব সিংহ। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেখানে তিনি চিকিৎসক নিগ্রহের ঘটনার নিন্দার পাশাপাশি এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে দিকে নজর রাখার নির্দেশ দেন।
এ দিন প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক সৌরভ সেনাপতি বলেন, “পুলিশের পদক্ষেপ করা উচিত।” সরব বিরোধীরাও। কংগ্রেস হাসপাতালের সামনে এ দিন প্রতিবাদ সভা করে। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা দেবাশিস ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের জেলা সভাপতির উপস্থিতিতে তৃণমূলের মহিলা কর্মী ক্ষমা চাইছেন, এর থেকে লজ্জার কিছু নেই।’’ খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।”