এত হিম্মত কোথা থেকে, উঠছে প্রশ্ন

পিস্তল দেখিয়ে সিপিএম কর্মীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, সেই তৃণমূল নেতা হিম্মত সিংহ চহ্বাণ ওরফে জয়প্রকাশকে সঙ্গে নিয়েই শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করল তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা নেতৃত্ব। হিম্মতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে, তাঁকে যেন গ্রেফতার না করা হয়, পুলিশ কমিশনারের কাছে সোমবার এই আর্জি জানালেন তাঁরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৬ ০২:৫৪
Share:

তৃণমূল জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার ও পুরসভার বিরোধী দলনেতা নান্টু পালের সঙ্গেই হিম্মত (চিহ্নিত)। — নিজস্ব চিত্র

পিস্তল দেখিয়ে সিপিএম কর্মীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে, সেই তৃণমূল নেতা হিম্মত সিংহ চহ্বাণ ওরফে জয়প্রকাশকে সঙ্গে নিয়েই শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করল তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা নেতৃত্ব। হিম্মতের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে, তাঁকে যেন গ্রেফতার না করা হয়, পুলিশ কমিশনারের কাছে সোমবার এই আর্জি জানালেন তাঁরা।

Advertisement

তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, অথচ তাঁকে সামনে পেয়েও কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, তা জানতে চাওয়া হলে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘অভিযোগ অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। তদন্তে দোষী বলে প্রমাণিত হলে নিশ্চয় গ্রেফতার করা হবে।’’ কিন্তু যত ক্ষণ পর্যন্ত না অপরাধ প্রমাণিত হচ্ছে, তত ক্ষণ কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। পুলিশ কর্তাদেরই একাংশের দাবি, এখনও তৃণমূল শাসক দলে থাকাতেই তাঁর নেতাদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তৃণমূলের দাবি, কেবল হিম্মতই নন, আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁদের নেতাদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিচ্ছে সিপিএম। এ দিন হিম্মতকে নিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছে যান জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার, শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল, জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি বিকাশ সরকার সহ অন্য নেতা কর্মীরা।

তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘আমরা পুলিশ কমিশনারকে মৌখিক ভাবে নিরপেক্ষ তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করতে বলেছি। সিপিএমের নেতা কর্মীরা যে কোনও ঘটনাকে রাজনৈতিক রং দেবার চেষ্টা করছেন। আমাদের কর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। সে বিষয়ে যাতে পুলিশ প্রভাবিত না হয়, তার আর্জি জানানো হয়েছে।’’ কমিশনারের আশ্বাসে তাঁরা ভরসা রাখছেন বলে জানান নান্টুবাবুও। যদিও গোটাটাই পরাজয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের মানসিক বিভ্রান্তি বলে মনে করছেন সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার। তিনি জানান, যিনি ভুক্তভোগী তিনিই নির্দিষ্ট অভিযোগ করেছেন। এতে রাজনৈতিক যড়যন্ত্র কোথায়? তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূলই গত কয়েক বছরে আমার, অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মতো অবাস্তব অভিযোগ দায়ের করেছেন। এটা ওঁদের সংস্কৃতি, আমাদের নয়।’’

Advertisement

গত শুক্রবার গভীর রাতে সিপিএম কর্মী শ্যাম যাদবের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে মারধর ও তাঁর পরিবারকে ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠেছে হিম্মতের বিরুদ্ধে। পিস্তল ঠেকিয়ে তাঁকে বাড়াবাড়ি না করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শ্যামবাবুর অভিযোগ, সিপিএমের সক্রিয় সদস্য বলেই তাঁকে হুমকি দেন হিম্মত। পর দিন শনিবার ঘটনা জানিয়ে প্রধাননগর থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। তার ভিত্তিতে পুলিশ একটি মামলাও করেছে। তবে তা অনেকটাই কমিশনের ভয়ে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।

হিম্মত তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, ওই দিন রাতে বাড়িতেই ছিলেন। তাঁর কাছে কোনও পিস্তলও নেই। সমস্ত মিথ্যা অভিযোগ বলে তাঁর দাবি। তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজি, সিন্ডিকেট চালানোর যে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলি বিরোধীদের রটানো বলে তাঁর দাবি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement