চা বাগানের মায়ের জন্য ক্রেশের বন্দোবস্ত করবে রাজ্য সরকার, ঘোষণা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ফাইল চিত্র।
চা বাগান সংলগ্ন এলাকাতেই হবে বাচ্চাদের রাখার ক্রেশ। সব চা শ্রমিককে দেওয়া হবে পরিচয়পত্রও। রাজ্য সরকারের এমন উদ্যোগের ঘোষণা করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার জলপাইগুড়ির মালবাজারে আইএনটিটিইউসির চা শ্রমিকদের কর্মিসভায় চা শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলেন তিনি। সেখানে অভিষেক বলেন, ‘‘অনেককে বাচ্চা পিঠে বেঁধে চা পাতা তুলতে বেরোতে হয়। আমি আপনাদের অসুবিধার কথা জেনেছি। বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করতে আপনাদের অসুবিধা হয়। প্রধানমন্ত্রী নিজেকে চাওয়ালা বলেন। কিন্তু যাঁরা চা বাগানে কাজ করেন তাদের দেখেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতায় থাকলেও আপনাদের দিকে নজর রেখে চলেছেন। তাই ক্রেশে বাচ্চাদের রেখে আপনার নির্বিঘ্নে কাজে যেতে পারবেন। আমরা সেই ব্যবস্থা করছি।’’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘‘ছ’মাসের মধ্যে সব কাজ হবে। এই সব বিষয় নিয়ে কথা বলেছি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। এ বার থেকে বাচ্চা নিয়ে কাজে যেতে হবে না। ৫০টি করে বাচ্চা রাখার ব্যবস্থা হবে। মোট ২,৫০০ হাজার বাচ্চা রাখার ব্যবস্থা হবে। প্রথমে একটি ক্রেশে ৫০টি করে বাচ্চা রাখা গেলেও, পরে সেখানে যাতে ৬০-৭০টি বাচ্চা রাখার ব্যবস্থা করা যায়, সেই ব্যবস্থাও আমরা করব।’’
সভায় অভিষেক দাবি করেন এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের চা বাগানগুলিতে মোট তিন লক্ষ ৮৩ হাজার চা শ্রমিক রয়েছেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। তাঁর উদ্দেশে অভিষেক বলেন, ‘‘আমি শ্রমমন্ত্রীকে অনুরোধ করব, প্রত্যেক চা শ্রমিকের জন্য যাতে পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়।’’ এই কাজের জন্য তিনি শ্রম দফতরকে তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে চা বাগানের সব শ্রমিকের পরিচয়পত্র দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
ক্রেশ ও পরিচয়পত্র ছাড়াও, আগামী ছ’মাসের মধ্যে চা বাগান জুড়ে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার কথাও বলেছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়েও আপনাদের বেশ কিছু অসুবিধার কথা জেনেছিলাম। শুনেছিলাম, আপনারা চা বাগানে একটি অ্যাম্বুলেন্স চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও আমার কথা হয়। ছ’মাসের মধ্যে ২০টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈর হবে। সঙ্গে থাকবে ট্রমা কেয়ার সেন্টার-সহ অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাও। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চা বাগানের পানীয় জলের পরিস্থিতি ঠিক করতে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের মন্ত্রী পুলক রায়কে সেখানে পাঠানোর কথাও বলেছেন অভিষেক।