বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল ছবি।
বিধানসভা ভোটের আগে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দলে ফেরাতে সম্মত তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু শোভনই নন, তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও সক্রিয় ভাবে রাজনীতিতে নিতে চলেছেন দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। সে ক্ষেত্রে ২১শে জুলাইয়ের সভামঞ্চেই শোভন-বৈশাখীকে দেখা যেতে পারে এক সঙ্গে।
দীর্ঘ দিন বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে প্রায় গৃহবন্দি শোভন ফের সক্রিয় হতে চলেছেন তৃণমূলে। দলীয় সূত্রের খবর, জুনের মাঝামাঝি এ ব্যাপারে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথাও হয়েছে তাঁদের। তার ভিত্তিতেই শোভনের এই ‘প্রত্যাবর্তন’ এখন প্রায় চূড়ান্ত। দলীয় সূত্রে আরও ইঙ্গিত, শুধু শোভনই নন। তাঁর ‘আগ্রহে’ বৈশাখীও নির্বাচনী রাজনীতিতে আসতে চলেছেন। সব কিছু ঠিকঠাক এগোলে বিধানসভা ভোটের আগে কোনও আসনের উপনির্বাচনে বৈশাখীকে প্রার্থী করতে পারে তৃণমূল। শোভনও গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পেতে পারেন। দলীয় নেতৃত্বের দূত হিসেবে তৃণমূলের দক্ষিণ কলকাতা জেলার এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে বেহালার দুই নেতাও নেতৃত্বের বার্তা নিয়ে শোভনের সঙ্গে কথা বলেছেন। দল যে তাঁদের আগ্রহকে মর্যাদা দিতে চায়, শোভনকে সে কথাও জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
কলকাতার মেয়র-পদ ও রাজ্যের একাধিক দফতরের মন্ত্রিত্ব ছেড়ে ২০১৮ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শোভন। সেই সময়েই তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে গিয়েছিলেন শোভনের বান্ধবী বৈশাখীও। কিন্তু বছর তিনের মাথায় ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই বিজেপির সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বাড়তে থাকে তাঁদের। প্রায় তখন থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগও বাড়তে থাকে। বান্ধবীকে নিয়ে বার দুয়েক কালীঘাটে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন শোভন। তৃণমূলে থাকাকালীন মমতার স্নেহধন্য শোভন ও বৈশাখীর সঙ্গে তখন থেকেই কালীঘাটের যোগাযোগ দৃঢ়।
এর মধ্যে বিভিন্ন সময় শোভনদের দলে ফেরা নিয়ে জল্পনা থাকলেও তা এগোয়নি। শুধু তা-ই নয়, শোভন-বৈশাখীর নানা মন্তব্যে ‘প্রত্যাবর্তনের’ সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা থাকলেও দলের অন্দরে ‘দলত্যাগীদের’ নিয়ে আপত্তি ছিল তীব্র। তবে এখন তৃণমূলের আগ্রহেই এই বিষয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। শোভনদের ফেরার আলোচনার সঙ্গেই কথা শুরু হয়েছে দলে তাঁর জায়গা নিয়ে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘শোভন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগঠনের কিছুটা দায়িত্ব পেতে পারেন। কারণ, এ দায়িত্ব এক সময়ে তাঁরই ছিল।’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু জায়গায় এখন রাজনৈতিক ‘অস্থিরতা’ রয়েছে। সেই সঙ্গেই তাঁকেই তৃণমূল কলকাতার মেয়র পদে ফেরাতে চায় কি না, সে কথাও ঘুরছে দলে। কলকাতা শহরেও তৃণমূলের ভোট কমে যাওয়ায় এই পরিবর্তন নেতৃত্বের বিবেচনায় থাকতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।