রেল স্টেশনে সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট হচ্ছে গ্রামাঞ্চলে। শহরে ঘুরেও এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে নেমেছে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও বিরোধী দল সিপিএম।
শিয়ালদহ, হাওড়ার মতো ব্যস্ত স্টেশন এবং ধর্মতলার মতো এলাকায় পঞ্চায়েত ভোট উপলক্ষে প্রচার চালাচ্ছে দু’পক্ষই। তাদের যুক্তি, শিয়ালদহ ও হাওড়া থেকে লোকাল ট্রেনে আশেপাশের জেলার অনেক মানুষ যাতায়াত করেন, যাঁরা আদতে পঞ্চায়েতের ভোটার। একই ভাবে ধর্মতলা থেকে দূরপাল্লার বাসে আসা-যাওয়া করেন জেলার লোকজন। স্থানীয় এলাকাভিত্তিক প্রচারের পাশাপাশি এই জায়গাগুলিতে গিয়ে জেলার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। তৃণমূলের প্রচারের মূল বিষয়, লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রীর মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের নানা কল্যাণমূলক প্রকল্প। আর সিপিএম হাতিয়ার করেছে দুর্নীতি এবং পঞ্চায়েতে লুটের অভিযোগকে।
শাসক বা বিরোধী উভয় পক্ষেরই কলকাতার কর্মীরা সরাসরি পঞ্চায়েত ভোটের সঙ্গে যুক্ত নন। তাঁদের এই প্রচারে কাজে লাগানো হচ্ছে। কলকাতা জেলা সিপিএম গণ-পরিবহণের একাধিক কেন্দ্রে এই কর্মসূচি নিয়েছে। সিটু নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষের কথায়, ‘‘আমরা এই কর্মসূচির নাম দিয়েছি ‘শহরের কোলাহলে গঞ্জের কলতান’। স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাটে আমরা পঞ্চায়েতের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি।’’ শিয়ালদহ, বিধাননগর, বালিগঞ্জ, টালিগঞ্জ-সহ ৭টি স্টেশনে শুক্রবার ভোরে এই প্রচার চালিয়েছে সিপিএম। ট্রেনে উঠেও যাত্রীদের মধ্যে প্রচার চলছে। ধর্মতলা বাস ডিপো এবং ফেয়ারলি প্লেস লঞ্চ ঘাটেও এ দিন প্রচার হয়েছে। রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ‘‘ট্রেনে মহানগরীতে আসা লক্ষ লক্ষ নিত্যযাত্রী, যাঁরা পঞ্চায়েতে ভোট দেবেন, তাঁদের জন্য শিয়ালদহ, হাওড়া-সহ কিছু স্টেশনে সকাল-বিকাল প্রচার-সভা করেছে তৃণমূল। শূন্য পাওয়া সিপিএম সেটা নকল করে প্রচারে নেমেছে!’’
এরই পাশাপাশি টক্কর চলছে সমাজমাধ্যমেও। বিভিন্ন চালু প্রবাদকে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে কাজে লাগিয়ে সিপিএম শুরু করেছে ‘পঞ্চায়েতি বাগধারা’। যেমন, ‘দহরম মহরম’ বলতে সেখানে বোঝানো হচ্ছে ‘চোর তৃণমূল ও ডাকাত বিজেপি’র সম্পর্ক। তৃণমূল আবার বিরোধী সিপিএম-বিজেপির ‘বোঝাপড়া’ এবং আদালতে যাওয়াকে নিশানা করে পাল্টা প্রচারে নেমেছে।