চিঠি না পাঠানোয় শপথ বয়কট কংগ্রেস, তৃণমূলের

মেয়র পারিষদদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়ে আমন্ত্রণ না-করায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের কাউন্সিলররা। অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে ফোন করে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। শিলিগুড়ি পুরসভার তৃণমূলের দলনেতা নান্টু পাল, দলের কাউন্সিলর তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের স্ত্রী শুক্লা দেব-সহ অনেকেই তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকী সোমবার তাঁরা পুরসভায় মেয়র পারিষদদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৫ ০৩:৩১
Share:

মেয়র পারিষদদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে চিঠি পাঠিয়ে আমন্ত্রণ না-করায় ক্ষুব্ধ তৃণমূলের কাউন্সিলররা। অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে ফোন করে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। শিলিগুড়ি পুরসভার তৃণমূলের দলনেতা নান্টু পাল, দলের কাউন্সিলর তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের স্ত্রী শুক্লা দেব-সহ অনেকেই তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকী সোমবার তাঁরা পুরসভায় মেয়র পারিষদদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করেন। শুক্লাদেবী জানিয়েছেন, এ দিন ১ ঘন্টা আগে তাঁকে ফোন করে অনুষ্ঠানের কথা জানানো হয়েছে।

Advertisement

তৃণমূলের দলনেতা নান্টু পাল জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে রবিবার একটি অনুষ্ঠানে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যর দেখা হয়েছিল। সেখানে তিনি মুখে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আসার কথা জানিয়েছেন। তবে পুরসভা থেকে কোনও চিঠি বা ফোন পাননি। দলের অনেক কাউন্সিলরও ফোন পাননি। তাই তাঁরা শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাননি। বিষয়টি সৌজন্য বোধের অভাব বলে নান্টুবাবু অভিযোগ করেন। তাঁর কথায়, সৌজন্য দেখাতে অন্তত ২৪ ঘন্টা আগে চিঠি দেওয়া দরকার।

কংগ্রেসের চার কাউন্সিলরও এ দিন শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাননি। কংগ্রেসের পুরসভার দলনেতা সুজয় ঘটক বলেন, ‘‘এ দিন ফোন করে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছে। কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি।’’ তবে বিজেপি’র দুই জন কাউন্সিলর অবশ্য গিয়েছিলেন।

Advertisement

মেয়র বলেন, ‘‘একদিন আগে জানাতে হবে বলে কোথাও লেখা নেই। কেন্দ্রীয় বা রাজ্য মন্ত্রিসভাতে কয়েক ঘন্টার নোটিসে শপথ নেওয়া হয়েও থাকে। এ দিনের শপথ গ্রহণ নিয়ে আমি নিজেই অনেককে বলেছি। বাকিদের পুরসভার তরফে ফোন করে জানানো হয়েছে। তবে একটু সময় নিয়ে করতে পারলে নিশ্চয়ই ভাল হত।’’ তিনি জানান, মেয়রের শপথ গ্রহণের দিন দুই দিনের মধ্যে মেয়র পারিষদ তৈরির কথা জানানো হয়েছিল। সেখানে ৫ দিন পার হয়ে গিয়েছে। মেয়র পারিষদের মধ্যে ৬ জন এ দিন শপথ গ্রহণ করেছেন। বিল্ডিং এবং পূর্ত দফতরের মেয়র পারিষদ নুরুল ইসলাম কলকাতায় গিয়েছেন বলে এ দিন আসতে পারেননি। তিনি ২৮ মে ফিরে শপথ নেবেন বলে জানানো হয়।

অন্য দিকে পুরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ এগিয়ে নিতে রাজ্যের তিন মন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন মেয়র অশোকবাবু। সোমবার তিনি শিলিগুড়ি থেকে পুর এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করতে সময় চান। দু’দিন আগেই কথা বলেছেন জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি বিভাগের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সুব্রতবাবু আগামী ২৭ মে অশোকবাবুকে দেখা করার সময় দিয়েছেন। সেই মতো আজ, মঙ্গলবার কলকাতায় রওনা দিচ্ছেন তিনি। এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর দফতরেও চিঠি পাঠিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছেন।

অশোকবাবু বলেন, ‘‘নানা উন্নয়ন কাজের জন্য পুরসভার আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। পানীয় জলের পরিষেবা উন্নত করার মতো পুর উন্নয়নের বিভিন্ন কাজ রয়েছে। জল প্রকল্পের বিষয়টি নিয়ে সুব্রতবাবুর সঙ্গে কথা বলব। তার কাছে সময় চেয়েছিলাম। তিনি আগামী বুধবার দেখা করবেন বলেছেন। পুরমন্ত্রীকেও এ দিন ফোন করেছিলাম। বিধানসভা চলছে বলে তিনি ব্যস্ত রয়েছেন। দেখা করার সময় তিনি বলে দেবেন বলেছেন।’’ অশোকবাবুর দাবি, সুব্রতবাবু যখন মেয়র, ফিরহাদ হাকিম যখন মেয়র পারিষদ ছিলেন তখন তিনি পুরমন্ত্রী ছিলেন। সে সময় সুব্রতবাবু, ফিরহাদ হাকিমদের তিনি উন্নয়ন কাজের ব্যাপারে নানা ভাবে সাহায্য করেছেন। অশোকবাবু বলেন, ‘‘সে জন্য সুব্রতবাবুকে বলেছি আপনি মেয়র থাকার সময় আমি মন্ত্রী হিসাবে সাহায্য করেছিলাম। এখন আমি মেয়র, আপনি মন্ত্রী। এ বার আমাকে সাহায্য করতে হবে। তাতে ওঁরা সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।’’

শিলিগুড়ির পানীয় জলের পরিষেবার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান মেয়র। এ দিন পুরভবনে পানীয় জলের পরিষেবার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবরও নেন। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর গজলডোবা এলাকায় তিস্তা থেকে সরাসরি শিলিগুড়িতে জল সরবরাহের জন্য ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন সুব্রতবাবু। সেই কাজ করার ব্যাপারে তৎপর অশোকবাবু। তা ছাড়া দশ নম্বর জোনে পানীয় জলের যে প্রকল্পের কাজ চলছে অর্থের অভাবে সেই কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। এস়জেডিএ কর্তৃপক্ষের তরফে ৫ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই মতো ৩ কোটি দেওয়াও হয়েছে। বাকি দুই কোটি টাকা পেলে বাকি কাজ শেষ করা যাবে। সে কারণে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান গৌতমবাবুর সঙ্গে তিনি কথা বলতে চান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement