গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
আগে উদযাপন করেছে, এমন আয়োজকদেরই ‘রামনবমী’ পালনের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এ বার নতুন করে কোনও আবেদনে অনুমতি দেওয়া হবে না। মঙ্গলবার নবান্নের শীর্ষ মহল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের পাশাপাশি নির্ধারিত পথের বাইরে কোনও শোভাযাত্রা নিতেও নিষেধ করা হয়েছে।
এই প্রস্তুতি পর্ব ঘিরে গত কয়েকদিনের তরজায় বিরোধী বিজেপির মতো এ দিন সক্রিয়তা বাড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যেমন জেলা ঘুরে মিছিলে উৎসাহ তৈরি করেছেন তেমনই রামনবমীতে তাদের ‘অধিকার’ ব্যাখ্যা করতে পথে নেমে পড়েছে তৃণমূলও। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেছেন পুরোহিত সংগঠনের সঙ্গে।
মঙ্গলবারও এ নিয়ে পরস্পরকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি ও তৃণমূল। মিছিলের আয়োজনে প্রশাসনিক বাধার অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তমলুকে তিনি বলেন, ‘‘রামনবমীর গেট করতে গেলে পুলিশ বাধা দিচ্ছে! বলছে, জাতীয় সড়ক কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আসুন।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সারা বছর মুখ্যমন্ত্রী আর তাঁর ভাইপোর ছবি দিয়ে যে গেট করা হয়, সেগুলি কার অনুমতি নিয়ে হয়?’’ শুভেন্দুর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যদি কোনও ধর্মকে গন্দা বলেন, তা হলে পুলিশ তো উৎসাহ পাবেই।’’ শুভেন্দুর সুরেই আর এক পা এগিয়ে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘হিন্দু পুজোপাঠে পুলিশের অনুমতির কোনও দরকার নেই।’’ তাঁর নিদান, ‘‘মিছিল কটা হবে, কোথায় হবে, কারা আসবেন সেটা আয়োজকরা ঠিক করবেন, পুলিশ নয়।’’
এ দিকে, রামনবমীর নামে বিজেপির বিরুদ্ধে উগ্র ধর্মীয় রাজনীতি করার অভিযোগে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতা রাজীব। এ দিন শুভেন্দুর জেলায় পুরোহিত সংগঠনের একটি বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘‘রামনবমী কি আগে হয়নি? দু’-তিন বছর ধরে এ সব হুঙ্কার শুরু হয়েছে কেন ? শুভেন্দুরা কি হিন্দু ধর্মের ঠিকা নিয়েছেন?” তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ইদের জমায়েতে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। আজ নয়, মুখ্যমন্ত্রী তো বরাবর সব ধর্মের অনুষ্ঠানেই যান। তা নিয়ে বিজেপির নেতারা নীরব থাকেন কেন?’’
সংগঠনও রামনবমীর উদযাপনের দিন রাস্তায় থাকবে বলে জানিয়েছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে বলেন, ‘‘সারা রাজ্যে শিবির করব আমরা। রাস্তায় থেকে যে কোনও রকম অশান্তি তৈরির চেষ্টা আমরা রুখব। আমাদের উপর দিয়েই তাদের যেতে হবে।’’ তাঁদের এই ঘোষণাকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘অশান্তির বিরোধিতা ভাল কথা। কিন্তু ওঁদের আগে বিজেপির বাক্সে দেওয়া নিজেদের ভোটগুলি ফেরাতে হবে। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার দৃষ্টান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আছে। তাঁর প্রশাসনের আছে।’’