বারুইপুর সেন্ট্রাল জেলের বন্দিরাই প্রথম ম্যাট্রেস পেতে পারেন।—ফাইল চিত্র।
বারুইপুর সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দিদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে পরের দিনই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বদলি করা হল তিন জেল আধিকারিককে। ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ব্যাপক সংঘর্ষ হয় বন্দিদের মধ্যে।
জেল সূত্রে খবর, ওই দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। পরে পরিস্থিতি সামলাতে ডেপুটি জেলার শান্তনু ঘোষের নেতৃত্বে জেলরক্ষীরা ব্যাপক লাঠিচার্জ করেন বন্দিদের উপর। দু’টি ঘটনা মিলিয়ে অন্তত১০ জন বিচারাধীন বন্দি আহত হন। বন্দিদের অভিযোগ, জেলরক্ষীরা এলোপাথাড়ি মারধর করা হয় তাঁদের। রাতে একবিচারাধীন বন্দিকে বাইরের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। বন্দিদের অভিযোগ,জেল হাসপাতালে চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই। কোনও চিকিৎসকও ছিলেন না। আহত বন্দিরা কোনও চিকিৎসার সুযোগই পাননি।
রাতেই বারুইপুর পৌঁছন জেল সুপার শুভেন্দুকৃষ্ণ ঘোষ। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বন্দিরা। সূত্রের খবর ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ওই দিন দায়িত্বে থাকা ডেপুটি জেলার শান্তনু ঘোষ এবং আরও দুই আধিকারিক— চিফ হেড ওয়ার্ডার এবং ডিসিপ্লিন অফিসারের গাফিলতি সামনে আসে। শুক্রবার বারুইপুর যান ডিআইজি (কারা) বিপ্লব দাস। তিনিও তদন্তে ওই আধিকারিকদের গাফিলতি খুঁজে পান। সঠিক সময় হস্তক্ষেপ করলে ওই সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেত না বলে মনে করছেন কারা বিভাগের কর্তারা। তারপরেই ওই তিনজনকে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ফুটবল খেলাকে ঘিরে বারুইপুর জেলে বন্দিদের মধ্যে সংঘর্ষ, জখম অন্তত ৮
আরও পড়ুন: ভোটের আগে অস্ত্রের বরাত! হলদিয়ার অস্ত্র কারখানার পর্দাফাঁস করল এসটিএফ
অন্যদিকে, আলিপুর থেকে সরিয়ে যে প্রায় ৫৫০ জন বিচারাধীন বন্দিকে সদ্য নির্মিত বারুইপুর জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাঁরা এ দিন জেল সুপারের কাছে লিখিত ভাবে তাঁদের অভিযোগ জানান। সূত্রের খবর, জেলে জলের অত্যন্ত অভাব। বন্দিরা প্রয়োজনীয় পানীয় জলও পাচ্ছেন না। নিয়ম অনুযায়ী জেলে যে ফোনের ব্যবস্থা থাকার কথা তা-ও নেই।জেল হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। এ রকম একাধিক পরিকাঠামোগত অভাবের কথা তাঁরা জানিয়েছেন সুপারের কাছে। সেই সঙ্গে তাঁরা অনশনও শুরু করেছেন। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের গন্ডগোলের জেরে কোনও বন্দি খাবার পাননি। সকালেও তাঁদের খাবার দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে তাঁরা অনশন শুরু করেছেন। জেল সূত্রে খবর, অবিলম্বে পানীয় জল থেকে শুরু করে জেল হাসপাতালে চিকিৎসারক বন্দোবস্ত না করা পর্যন্ত তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন বন্দিরা।