মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত রাজ্যে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ-সহ অসুখে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
অ্যাডিনোভাইরাস সংক্রমণের লেখচিত্র নিম্নগামী। কিন্তু সেই জায়গায় ধীরে হলেও মাথা চাড়া দিচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা-এ ভাইরাস (এইচ১এন১ এবং এইচ৩এন২ প্রজাতি)। বিষয়টি নজরে এসেছে স্বাস্থ্য দফতরেরও। তাই, প্রথম থেকেই কড়া নজরদারি রাখতে চাইছে রাজ্য সরকারও।
শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের (অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন) পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে রাজ্য সরকার। বুধবার আট সদস্যের সেই কমিটি পর্যালোচনা বৈঠকে বসে। সেখানেই নতুন যে সমস্ত ভাইরাসের দাপাদাপির খবর মিলছে, তা বিশ্লেষণ করে আগাম প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেই খবর। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত রাজ্যে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ-সহ অসুখে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে বিসি রায় শিশু হাসপাতালে দুই এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে একজন চিকিৎসাধীন ছিল। মঙ্গলবার হুগলির হরিপালের বাসিন্দা বছর দুয়েকের শিশু মারা যায় কলকাতা মেডিক্যালে। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে নিউমোনিয়া, সেপসিস ও বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই দিন গভীর রাতে বাদুড়িয়ার বাসিন্দা চার মাসের এক শিশু কন্যা এবং এ দিন ভোরে নদিয়ার নাকাশিপাড়ার এগারো মাসের শিশুপুত্রের মৃত্যু হয় বিসি রায় হাসপাতালে। দুজনেই পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ছিল। তাদের জ্বর, শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি খিঁচুনি ও র্যাশের সমস্যা ছিল।
শিশুদের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের চিকিৎসায় কী ব্যবস্থাপনা করতে হবে সে বিষয়ে বিধি রয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। কিন্তু হাসপাতালগুলিতে তা কতটা মেনে চলা হচ্ছে সে বিষয়েও নজরদারি চালাবে স্বাস্থ্য ভবন। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আচমকাই হাসপাতালগুলিতে গিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখবে ‘প্রোটোকল মনিটরিং কমিটি’। প্রতিটি মৃত্যুর প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখতে ‘ডেথ অডিট’-এ বিশেষ জোর দিতেও বলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১৩ হাজার ৬১ জন শিশু জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ-সহ অসুখে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলেই স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।