Biman Basu

Biman Basu: জোটে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে এ বার প্রশ্ন বিমানের

বামেদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে জোটের বিচ্ছেদ ঘোষণা হয়নি। কিন্তু এআইসিসি-র নির্দেশে ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিয়ে প্রচার থেকে সরে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:৩২
Share:

ত্রিপুরায় বামপন্থীদের উপরে আক্রমণ এবং কেন্ত্রীয় কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে মঙ্গলবার ধর্মতলায় বামপন্থীদের জমায়েত। নিজস্ব চিত্র

বামেদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ভাবে জোটের বিচ্ছেদ ঘোষণা হয়নি। কিন্তু এআইসিসি-র নির্দেশে ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিয়ে প্রচার থেকে সরে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেস। আবার মুর্শিদাবাদের দুই কেন্দ্র শমসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে বামেদের সমর্থন করা হবে বলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ঘোষণা করার পরেও সেখানে এক এক রকম অবস্থান নিচ্ছে তারা। শমসেরগঞ্জের দলের প্রার্থী লড়তে রাজি না থাকায় এখন বলা হচ্ছে, কংগ্রেস তাদের প্রতীক দেখিয়েই সমর্থন চাইবে! এই পরিস্থিতিতে এ বার জোটের মধ্যে কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। জোট ভেঙে গেলে তার দায় যে কংগ্রেসের উপরেই বর্তাবে, প্রকারান্তরে সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন সিপিএমের পলিটবুরোর বর্ষীয়ান সদস্য।

Advertisement

ত্রিপুরায় সিপিএম দফতর এবং বাম নেতা-কর্মীদের উপরে বিজেপির হামলার প্রতিবাদে এবং সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ডাকা আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের ধর্মঘটের সমর্থনে মঙ্গলবার ধর্মতলায় সভা ছিল বামফ্রন্ট এবং সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের। প্রবল দুর্যোগের মধ্যেই সভা সেরে জোট সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বিমানবাবু জানান, কংগ্রেস কী করছে বা কী করবে, সেই বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই হয়নি! ভবানীপুরে কংগ্রেস প্রচারে নেই। মুর্শিদাবাদের দুই কেন্দ্রেও তারা সে ভাবে প্রচারে থাকবে না বলে শোনা গিয়েছে। আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বিষয়ে তাঁদের কিছু জানানো হয়নি বলে বিমানবাবুর বক্তব্য। রাজ্যে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে আসন সমঝোতার পরে সিপিএমের জন্যই সেই বোঝাপড়া কিছু দিন থমকে গিয়েছিল, এমন অভিযোগ আগে করেছে কংগ্রেস। এ বার কি কংগ্রেসের জন্য জোট ভেঙে যাচ্ছে? বিমানবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমরা জোট ভাঙতে চাই না, বারে বারেই সে কথা বলেছি। জোট যদি ভেঙে যায়, তা হলে কংগ্রেসের ভূমিকা মানুষ দেখবেন।’’ বস্তুত, কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে ঠিক আচরণ করছে কি না, রাজ্য কংগ্রেসের অন্দরেও সেই প্রশ্ন উঠছে।

বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান মনে করিয়ে দিয়েছেন, এ বার বিধানসভা ভোটে সমঝোতা হয়ে যাওয়ার পরেও বামেদের ভাগে থাকা জয়পুর আসনে প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস। আবার এখন জোটের মধ্যে আলোচনা ছাড়াই এক এক রকম অবস্থান নিচ্ছে তারা। বিধানসভা ভোটে লড়াই হয়েছিল সংযুক্ত মোর্চার নামে। এখন তিন কেন্দ্রের ভোটে বাকি শরিকেরা নেই বলে সংযুক্ত মোর্চা নয়, বামফ্রন্টের মঞ্চ থেকে তাঁরা লড়ছেন বলে এ দিন ফের জানিয়েছেন বিমানবাবু।

Advertisement

নাছোড় বৃষ্টির মধ্যে এ দিন ধর্মতলার ফুটপাথে দোকানের ছাউনির তলায় দাঁড়িয়ে সভা করেন বাম নেতারা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র সেখানে বলেন, কেন্দ্রীয় কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে কোনও প্ররোচনায় পা না দিয়ে দিল্লিতে কৃষকেরা যে ভাবে ১০ মাস ধরে অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন, স্বাধীনতার পরে এমন আন্দোলন হয়নি। সূর্যবাবুর বক্তব্য, ‘‘মোদী সরকার আইন শিথিল করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামের উপরে নিয়ন্ত্রণ তুলে নিতে চাইছে। এ রাজ্যে তৃণমূল সরকার কৃষিপণ্য বিপণন আইন সংশোধন করে সেই পথেই গিয়েছেন। তৃণমূল এবং তাদের নেত্রী কৃষকদের আন্দোলনের পাশে থাকার কথা বলেছেন। রাজ্য সরকারকে আবার আবেদন জানাচ্ছি, ২৭ তারিখের ধর্মঘটে বাধা দিয়ে দ্বিচারিতা আরও প্রকট করবেন না!’’ বক্তা ছিলেন সিপিআইয়ের স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, আরএসপি-র মনোজ ভট্টাচার্য, ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায় এবং লিবারেশনের অতনু চক্রবর্তী। ত্রিপুরায় বামেদের উপরে আক্রমণের পরে তৃণমূল তো বটেই, অন্য দলও যে সরাসরি নিন্দা করেনি, কংগ্রেসের নাম না করেই সে কথা বলেন নরেনবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement