প্রতীকী ছবি।
আবেদন করেছিলেন নিয়ম মেনে। নির্বাচিতও হন রাজ্য সরকারের ‘শিক্ষারত্ন’ পুরস্কারের জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই পুরস্কার নিলেন না তৃণমূল কংগ্রেসের শিক্ষা সংগঠনের অন্যতম নেতা দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়।
শিক্ষারত্ন নিতে তিনি যে অপারগ, তা জানিয়ে দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত। কিন্তু এই পুরস্কার নেওয়ার জন্য আমি মানসিক ভাবে প্রস্তুত নই। তাই শিক্ষারত্ন নিচ্ছি না।’’ ওই পুরস্কার গ্রহণে নিজের অপারগতার কথা জানিয়ে তিনি শনিবার, শিক্ষক দিবসের রাতেই রাজ্যের শিক্ষাসচিব মণীশ জৈনের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়ে দেন।
বছর পঞ্চান্নের দিব্যেন্দুবাবু হাওড়া বালিটিকুরি মুক্তারাম দে হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি। শিক্ষাসচিবকে লেখা চিঠিতে তিনি জানান, শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের দায়িত্বে থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করা সঙ্গত হবে না বলেই মনে করেন তিনি। তাই তিনি শিক্ষারত্ন নিতে পারছেন না।
শিক্ষারত্ন পুরস্কারের জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিজের থেকেই আবেদন করতে হয়। প্রশ্ন উঠছে, দিব্যেন্দুবাবু যদি শিক্ষারত্ন না-ই নেবেন, আবেদন করেছিলেন কেন? দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘শিক্ষকতার পেশায় এক জন শিক্ষকের স্বমূল্যায়নের কোনও সুযোগ নেই। তাই আমি আবেদন করে দেখতে চাইছিলাম, আমি শিক্ষারত্ন পাওয়ার যোগ্য কি না। দেখলাম, আমাকে নির্বাচিত করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমার মনে হয়েছে, দলের শিক্ষক সংগঠনের দায়িত্বে থেকে আমি এই পুরস্কার নিতে পারি না।’’
এ বার শিক্ষারত্ন বাছাইয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের শিক্ষাদানের দক্ষতা ছাড়াও অন্য কয়েকটি বিষয় বিশেষ ভাবে বিবেচনা করা হয়েছে বলে শিক্ষা সূত্রের খবর। যেমন আবেদনকারী শিক্ষক করোনা, ঘূর্ণিঝড় আমপানের ত্রাণে ছাত্রদের সাহায্য করেছেন কি না ইত্যাদি। দিব্যেন্দুবাবুর বক্তব্য, তিনি অতিমারি ও আমপানে বিপর্যস্ত ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
তৃণমূল শিক্ষা সংগঠনের নেতার শিক্ষারত্ন পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শিক্ষা শিবিরের একাংশে আঙুল তোলা শুরু হয়।
সমালোচনা শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়াতেও। সেই জন্যই কি তিনি শিক্ষারত্ন নিচ্ছেন না? দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘কারা সমালোচনা করছেন, জানি না। আমি শিক্ষারত্ন পাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই পুরস্কারটি না-নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। চিঠিও পাঠিয়ে দিই।’’