ফাইল চিত্র।
ছোট কয়েকটি সংস্থা ব্যর্থ হয়েছে। এয়ার ইন্ডিয়াও সফল হয়নি। রাজ্যের অন্যতম ‘শো-কেস’ প্রকল্প অন্ডাল থেকে সবেধন নীলমণি উড়ানটিও এ বার তুলে নিল জুম এয়ার। দিল্লির সংস্থা জুম এয়ার ওই উড়ান চালাচ্ছিল দিল্লি-অন্ডাল-কলকাতা-অন্ডাল-দিল্লি রুটে। সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
সব মিলিয়ে অন্ডাল থেকে নিয়মিত উড়ান চালানো এখনও প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে। রাজ্য সরকার অবশ্য নতুন করে ৩০০ কোটি টাকা ঢালছে ওই বিমানবন্দরে। এই বিনিয়োগের ফলে ওই প্রকল্পে রাজ্যের অংশীদারি ১১ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৬ শতাংশ হবে। ওই প্রকল্পের জন্য বাজারে ৪৫০ কোটি টাকা ধার হয়ে গিয়েছে। তার একাংশ শোধ করা হবে সরকারের টাকায়।
অন্ডাল বিমানবন্দর লাইসেন্স পাওয়ার পর থেকে কিছু ছোট সংস্থা সেখান থেকে ছোট বিমান চালানোর চেষ্টা করেও পারেনি। শেষে চুক্তি করে এয়ার ইন্ডিয়াকে আনা হয়েছিল। কিন্তু অন্ডাল বিমানবন্দর প্রকল্প ভর্তুকি দিয়েও সেই উড়ান চালাতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত অন্ডালের সঙ্গে দিল্লি ও কলকাতাকে যুক্ত করে জুম এয়ার। ৫০ আসনের সিআরজে (কানাডিয়ান রয়্যাল জেট) বিমান চালাচ্ছিল তারা। ১৪ জুলাই অন্ডালে পাখির ধাক্কা লেগে বিমানটি বসে যায়।
মনে করা হচ্ছিল, মেরামতির পরে বিমানটিকে এই রুটে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু জুম এয়ার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিমান সারিয়ে তারা ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে দিল্লি-জবলপুর-কলকাতা-জবলপুর-দিল্লি রুটে উড়ান চালাতে শুরু করেছে। কলকাতা থেকে জবলপুরের এটিই প্রথম উড়ান।
অন্ডাল থেকে একমাত্র উড়ানটি কেন তুলে নিল জুম?
জুম এয়ারের খবর, কলকাতা-অন্ডাল রুটে ৫০ আসনের বিমানে যাত্রী হচ্ছিল মেরেকেটে ৪-৫ জন। ওই রুটে উড়ান চালিয়ে প্রতিদিন আড়াই লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছিল তাদের। অথচ তার জায়গায় এখন জবলপুর-কলকাতা রুটে প্রায় ৬০ শতাংশ যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে। তবে আশারও কথা শোনা গিয়েছে। জুম এয়ারের সিইও এবং এমডি কৌস্তুভ ধর দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, ‘‘আমাদের দ্বিতীয় বিমানটি তৈরি আছে। আমরা এ বার অন্ডাল থেকে সরাসরি দিল্লির উড়ান চালাব। কলকাতাকে যোগ করব না। দিল্লি-অন্ডাল রুটে গড়ে ৪২ জন যাত্রী পাচ্ছিলাম। অন্ডাল থেকে মুম্বইয়েও উড়ান চালাতে চাই। কিন্তু মুম্বইয়ে নামার অনুমতি এখনও মেলেনি।’’
অন্ডাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী দিনে অন্ডাল থেকে কলকাতা উড়ান চালাতে চায় ডেকান এয়ার। তবে সেই উড়ান ‘লাভজনক’ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিমান পরিবহণে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের।
অন্ডালে বিভিন্ন সংস্থার উড়ান বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কেন?
অন্ডাল বিমানবন্দরের এক কর্তার ব্যাখ্যা, দুর্গাপুর শহর থেকে অন্ডাল আসার কোনও যাত্রিবাহী বাস নেই। গড়ে ৪০০-৫০০ টাকা নেয় ট্যাক্সি। তার সঙ্গে আছে কলকাতা যাওয়ার বিমান ভাড়া গড়ে তিন হাজার টাকা। তা ছাড়াও বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে বসে থাকতে হয় দীর্ঘ ক্ষণ। অথচ দুর্গাপুর শহর থেকে এসি বাসে ৪০০ টাকায় কলকাতায় পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে। ‘‘মানুষ তা হলে উড়ানে যাবেন কেন,’’ প্রশ্ন ওই কর্তার।