— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জেলায় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ বহু বছর ধরে ফাঁকা ছিল। সেই সব ফাঁকা পদে প্রাথমিক স্কুলেই কর্মরত সবচেয়ে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়োগ করা হচ্ছে। এত দিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের দিয়ে সেই কাজ চলছিল। তবে এই অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের এক কর্তার দাবি, অভিযোগ ঠিক নয়। প্রধান শিক্ষক পদে যে সব কর্মরত শিক্ষক কাজ করতে ইচ্ছুক, তাঁদের কাছে দরখাস্ত চাওয়া হয়েছিল। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ করেছেন তাঁরা।
অভিযোগ, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতা বিকাশ নস্কর বলেন, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্কুলে সিনিয়রটি বা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। এ নিয়ে স্কুলে বিক্ষোভও হয়েছে। স্কুলের এক সিনিয়র শিক্ষককে সরিয়ে অন্য স্কুল থেকে এক শিক্ষককে এনে তাঁকে প্রধান শিক্ষকের পদে বসানো হয়েছে।’’
শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনাই নয়, অন্য কয়েকটি জেলা থেকেও একই অভিযোগ উঠে এসেছে। অভিযোগ, যিনি বছরের পর বছর প্রাথমিক স্কুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে কাজ করেছেন, তাঁকে প্রধান শিক্ষক করা হয়নি। প্রধান শিক্ষকের পদে বসিয়ে কোনও কোনও শিক্ষককে অন্য স্কুলে বদলি করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে শাসক দলের সমর্থক শিক্ষকেরা অগ্রাধিকার পেয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, এই নিয়োগের আগে কাউন্সেলিং করার কথা বলেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। অভিযোগ, কাউন্সেলিং সব ক্ষেত্রে হচ্ছে না।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতিদের অবশ্য দাবি, পুরোটাই নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অজিত কুমার নায়েক বলেন, ‘‘শুধু আমাদের জেলাতেই গত ১৮ বছর ধরে ২৯৯৪টি প্রাথমিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক ছিলেন না। সেখানে নিয়োগ হল। কোনও গোপনীয়তা নেই। যে স্কুলে যাঁরা সিনিয়র, তাঁদের নামের তালিকা প্রকাশ হয়েছিল। যাঁরা এতদিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ সামলেছেন, তাঁদের থেকে হয়তো আরও সিনিয়র শিক্ষক সেই স্কুলে আছেন। তাই সেই সিনিয়র শিক্ষকই নিয়ম অনুযায়ী দায়িত্ব পেয়েছেন। অনেক স্কুলে দেখা গিয়েছে, সেখানে তিন জন সিনিয়র শিক্ষক রয়েছেন। তাঁরা তিন জনই প্রধান শিক্ষকের দাবিদার। বাকি দু’জনকে অন্য স্কুলে বদলি করা হয়েছে।’’ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘নিয়োগের বিষয়টি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদই করছে। নিয়ম মেনে নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে।’’