ফাইল চিত্র।
পার্থ সংক্রান্ত যাবতীয় বিতর্ককে পিছনে ফেলে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে এই মুহূর্তে দলের অনেক বিষয়ের রাশ রয়েছে বলে মানছেন দলের প্রবীণ সাংসদেরাও। তাঁদের মতে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলতি দিল্লি সফরেই তা প্রমাণিত হয়েছে।
দলীয় সূত্রের বক্তব্য, এ বারে মমতার সফরটি কী ভাবে হবে না হবে, তা কলকাতায় বসে আগাম পরিচালনা করছিলেন অভিষেক। সেই অনুযায়ী তিনি ফোনে যোগাযোগ করে গিয়েছেন তৃণমূলের সংসদীয় নেতাদের সঙ্গে। দিল্লিতে মমতার পাশাপাশি সাংসদদের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকও করেছেন অভিষেক। বর্ষাকালীন অধিবেশন চলছে বলে তৃণমূলের ‘টিম’ এখন দিল্লিতে। পরে তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “দিদির সঙ্গে সব সাংসদেরা মন খুলে গল্প করেছেন। আর অভিষেকের সঙ্গে কাজের কথাবার্তা হয়েছে।”
প্রথমে ঠিক ছিল, দলের রাজ্যসভার মুখ্য আহ্বায়ক সুখেন্দুশেখর রায়ের মহাদেবরোড-এর বাড়িতে তৃণমূল নেত্রী সাংসদদের সঙ্গে চা চক্রে মিলিত হবেন। তার পর সাংবাদিক সম্মেলন হবে। তার পর নৈশাহার। সাংবাদিকদের সম্ভাব্য তালিকাওচেয়ে পাঠান অভিষেক। কিন্তু পরে তিনি জানিয়ে দেন, সাংবাদিক সম্মেলন বাতিল করতে হবে। এই মুহূর্তে নেত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে চাইছেন না। এর পর আবারও নির্দেশ পাঠান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তা হল, দীর্ঘক্ষণ সাংসদদের বৈঠকে থাকবেন না নেত্রী। ফলে নৈশাহারের বন্দোবস্ত বাতিল করতে হবে। তাঁর কথা মতো ব্যবস্থা নেন তৃণমূল সাংসদেরা। এর পর একেবারে শেষ মুহূর্তে বলা হয়, বৈঠকের জন্য বড় মণ্ডপ না করে তা ছোট আকারের করতে। সূত্রের মতে, এই বৈঠক নিয়ে বাহ্যিক প্রচার বেশি হোক, এটা চাইছিলেন না নেত্রী। তবে শেষ মুহূর্তে মণ্ডপ ছোট করা অবশ্য সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিকেলের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সাংসদের সঙ্গে ঘরোয়া ভাবে আলাপাচারিতা সেরে চলে যান। কিন্তু থেকে যান অভিষেক। তিনি ভিতরের ঘরে প্রবীণ সাংসদদের সঙ্গে বসে বৈঠক করেন। জানতে চান সংসদ এবং বর্তমান রাজনীতি নিয়ে সবার মতামত। একটি সূত্রের দাবি, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী জগদীপ ধনখড়ের জয় এক রকম নিশ্চিত বলেই মনে করছে বড় অংশ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যসভার নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে ধনখড়কে স্বাগত ভাষণের বিষয়টি নিয়ে অভিষেক কথা বলেন সুখেন্দুশেখর রায়ের সঙ্গে। অভিষেক নিজেই সুখেন্দুকে সংসদে বিষয়টি বলতে বলেছেন। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, বাহুল্য ও অলঙ্কারবর্জিত ভাষণই দেওয়া হবে।
অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের পরে লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিষেকের আচরণ খুবই পরিণত একজন নেতার মতো। আমার খুব ভাল লেগেছে। আমাদের সবার বক্তব্য, আলাদা আলাদা করে শুনল। মতামত দিল। নিজের মত চাপিয়ে দিল না।” তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, কয়েক মাস আগে, জানুয়ারিতেই অভিষেকের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কল্যাণ।