রাজ্যের সরকারি স্কুলে সাদা-নীল ইউনিফর্ম দেওয়ার কাজ শুরু হবে শীঘ্রই।
সরকারি ও সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলিতে নীল-সাদা পোশাক দেওয়ার কাজ শুরু করে দিল প্রশাসন। সম্প্রতি এই কাজে গতি আনতে স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে একটি চালান পাঠানো হয়েছে। কোন স্কুলের কত পরিমাণ সাদা নীল ইউনিফর্ম প্রয়োজন তা ওই চালানে লেখা হবে। সেই চালানে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর করলেই স্কুলের জন্য বরাদ্দ পোশাক পৌঁছে দেওয়া হবে। কলকাতা এবং হাওড়ার বেশ কিছু সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের নীল-সাদা পোশাক দেওয়া শুরু হয়েছে। কলকাতায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে ১১৭টি স্কুলে এই পোশাকের একটি করে সেট দেওয়া হয়েছে বলে কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর। তবে অতি দ্রুততার সঙ্গে রাজ্যের সব জেলায় সাদা-নীল পোশাক স্কুল পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দিতে চাইছে শিক্ষা দফতর। তাদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রাক্-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছেলেদের জন্য একটি হাফ শার্ট, একটি ফুল শার্ট, একটি হাফ প্যান্ট এবং একটি ফুল প্যান্ট দেওয়া হবে। জামার রং হবে সাদা ও প্যান্টের রং হবে নেভি ব্লু। মেয়েদের যেমন আগে টিউনিক ও স্কার্ট, সালোয়ার, কামিজ এবং ওড়না ছিল, তা-ই থাকবে। মেয়েদের পোশাকেরও রং হবে সাদা ও নেভি ব্লু। সবেতেই থাকতে হবে বিশ্ববাংলার লোগো।
কয়েক মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সরকারি, সরকার-পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের পোশাকের রং হবে নীল-সাদা। পোশাকে থাকবে বিশ্ব বাংলার লোগো। সেই মর্মে মার্চ মাসে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা ঘোষণা করে শিক্ষা দফতর। তবে রাজ্যের সব স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের পোশাক নীল-সাদা হয়ে গেলে স্কুলগুলি তাদের নিজস্ব রঙের পোশাকের বৈশিষ্ট্য হারাবে বলে আগেই সরব হয়েছিলেন অনেক স্কুলের প্রধান শিক্ষক। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির তরফে স্বপন মণ্ডল বলেন, “আমরা এই সিদ্ধান্তকে রাজ্য সরকারের আগ্রাসন হিসেবেই দেখছি। কারণ, কোনও স্কুলের পোশাক কেমন হবে তা স্থানীয় মানুষের আবেগের সঙ্গে যুক্ত থাকে।” তবে এই প্রক্রিয়ায় কোনও ভুল দেখছেন না পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “প্রত্যেক রাজ্যের স্কুলের একটি নির্দিষ্ট পোশাক বা ইউনিফর্ম রয়েছে। তাই বাংলার স্কুলগুলিতে যদি একটি নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম হয় তাহলে ভুল কোথায়?”