—প্রতীকী চিত্র।
‘ভুয়ো’ পুলিশের পরিচয় দেওয়ার অভিযোগে ধৃত ওড়িশার এক যুবতীকে বীরভূম জেলা আদালত চত্বরেই মারধর ও তাঁর যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সিউড়িতে, পুলিশ হেফাজত থেকে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটট (সিজেএম)-এর এজলাসে নিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাটি ঘটে। ঘটনায় কড়া অবস্থান নিয়েছেন সিজেএম চন্দ্রপ্রভা চক্রবর্তী।
অভিযুক্ত যুবতীর আইনজীবী সোমনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, সিজেএম তাঁর মক্কেলের অভিযোগকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করে পুলিশকে মামলা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে। আমি নির্দেশ দিয়েছি অভিযোগ ধরে মামলা করতে। এ বার আইনগত ভাবে যা হওয়ার, তাই হবে।’’ জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী মলয় মুখোপাধ্যায়ও বলছেন, যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও অনভিপ্রেত।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত ১৩ অগস্ট ‘ভুয়ো’ আইপিএস পরিচয় দেওয়ার অভিযোগে পাড়ুই থানার পুলিশ গ্রেফতার করে শর্মিষ্ঠা ওরফে সুস্মিতা বেহেরা নামে ওই যুবতীকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, সিউড়ি ২ ব্লকের সেহেনা গ্রামে নুরুল ইসলামের বাড়িতে এসে তিনি নিজেকে তাঁর পুত্রবধূ হিসেবে পরিচয় দেন। নুরুল ইসলামের দাবি, তাঁর ছেলের বিয়েই হয়নি। পাশাপাশি ওই যুবতী নিজেকে ওড়িশার ডিএসপি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকের ‘ভুয়ো’ পরিচয় দিয়েছেন বলেও অভিযোগ। পুলিশের দাবি, তাঁর কাছে থেকে নকল পরিচয়পত্র মিলেছে।
শর্মিষ্ঠা এত দিন পুলিশি হেফাজতে ছিলেন। মঙ্গলবার আদালতে পেশ করার দিন ছিল। অভিযোগ, দুপুরে যখন তাঁকে আদালতে নিয়ে আসা হচ্ছিল, তখন তাঁকে উদ্দেশ করে গালিগালাজ করেন দুই আইনজীবী। শর্মিষ্ঠা প্রতিবাদ করলে তাঁকে জুতো দিয়ে মারেন ওই দুই আইনজীবী। তাঁর সঙ্গে থাকা পুলিশকর্মী আটকানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। আশপাশের আইনজীবীরাও থামাতে চলে আসেন। পরে সিজেএম পুরোটা জেনে শর্মিষ্ঠাকে লিখিত ভাবে অভিযোগ করতে বলেন। সেই অভিযোগ হতেই বিচারক অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করার নির্দেশ দেন পুলিশকে।
আইনজীবী সোমনাথবাবু বলেন, ‘‘শর্মিষ্ঠা ওই আইনজীবীদের পরিচয় দিতে পারেননি। তবে হেফাজতে থাকা এক মহিলা অভিযুক্তের সঙ্গে এই ঘটনা ভীষণ ক্ষুব্ধ করেছে বিচারককে।’’ আইনজীবীদের একাংশ জানাচ্ছেন, অভিযুক্তদের পরিচয় সামনে না এলেও তাঁরা সম্পর্কে দু’ভাই। পুলিশ তাঁদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে