সরকারি দফতর বা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বশাসিত সংস্থাগুলির ক্ষমতা খর্ব করার অভিযোগ বারবার উঠছে বর্তমান রাজ্য সরকারের জমানায়। সেই ধারা অব্যাহত রেখে এ বার সরকারি হাসপাতালে দন্ত চিকিৎসক নিয়োগের দায়িত্বও পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)-এর হাত থেকে নিয়ে নিল রাজ্য সরকার।
বিধানসভায় মঙ্গলবার এই মর্মে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ডেন্টাল সার্ভিস (অ্যামেন্ডমেন্ড) বিল, ২০১৫’ পাশ হয়। এ বিষয়ে ২০০৯ সালের পুরনো আইনের সংশোধনীতে এ বার বলা হয়েছে, এখন থেকে সরকারি ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতালে দন্ত চিকিৎসক নিয়োগ হবে হেলথ্ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে। সরকারি নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়ে রাজ্য সরকার নিজেদের পছন্দমাফিক লোক নিয়োগের জন্যই এই বোর্ড গড়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এসইউসি বিধায়ক তরুণ নস্কর বলেন, ‘‘এই বিলের মাধ্যমে সরকার ডেন্টাল সার্ভিসেও রাজনৈতিক এবং আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে চাইছে।’’ তাঁর অভিয়োগ, এই বিল পাশ হওয়ায় কোনও কোনও ক্ষেত্রে সরকার সরাসরি নিয়োগ করবে। ফলে নিয়োগে স্বচ্ছতার অভাব ঘটবে। কংগ্রেসের সুখবিলাস বর্মাও বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের পরিকাঠামোয় গোলমাল রয়েছে। সে দিকে নজর না-দিয়ে শাসক দল যত্রতত্র দলতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করছে।’’
সভার পরে সিপিএম বিধায়ক আনিসুর রহমান বলেন, ‘‘সরকার নিজের মনের মতো বোর্ড গড়ে মনের মতো লোক ঢোকানোর ব্যবস্থা করল। এতে দলতন্ত্র কায়েম হবে।’’ পিএসসিকে তৃণমূল সরকার গুরুত্বহীন করতে চাইছে বলে অভিযোগ তুলে সিপিএমের গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পিএসসি-র রিপোর্ট প্রতি বছর বিধানসভায় পেশ হওয়ার কথা। কিন্তু তৃণমূল সরকার চার বছরে একবারও তা করেনি। বোঝাই যায়, পিএসসি-কে সরকার কেমন গুরুত্ব দিচ্ছে!’’
জবাবি বক্তৃতায় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের দাবি, বোর্ডের মাধ্যমে স্বচ্ছভাবেই দন্ত চিকিৎসকদের নিয়োগ হবে। তিনি জানান, রাজ্যে তিনটি সরকারি ও দু’টি বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ আছে। এখান থেকে পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের যাতে চাকরির খোঁজে বসে থাকতে না-হয়, তার জন্যই নতুন নিয়োগ ব্যবস্থা। কিন্তু ২০১২-তে রাজ্যেরই তৈরি হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শ্লথ বলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ।