বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ চলতে থাকে। ছবি: ফেসবুক।
কলেজে পৃথক নবীনবরণ করতে চেয়েছিলেন এক দল সাঁওতালি পড়ুয়া। তা ঘিরেই গোলমাল বাধল বেলপাহাড়ির শিলদা চন্দ্রশেখর মহাবিদ্যালয়ে। সাঁওতালি পড়ুয়াদের বিক্ষোভে শুক্রবার নবীনবরণ তো বাতিল হলই। তার উপরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে দিনের শেষে পদ থেকে ইস্তফা দিলেন কলেজের উপাধ্যক্ষ (ভাইস প্রিন্সিপাল)।
এ দিন নবীনবরণ শুরুর আগেই সকাল থেকে কলেজের গেট আটকে আদিবাসী পড়ুয়ারা বিক্ষোভে শামিল হন। তাঁদের অভিযোগ, উপাধ্যক্ষ সুজাতা তিওয়ারি সাঁওতালি পড়ুয়াদের দাবি উপেক্ষা করে অনুষ্ঠান করছেন। বিকেল পর্যন্ত সেই বিক্ষোভ চলতে থাকে।
এই কলেজের দায়িত্বে রয়েছেন উপাধ্যক্ষই। সেই পদে ইস্তফা দিয়ে সুজাতা কলেজ ছাড়েন বিকেলে। তিনি বলছেন, ‘‘দশ বছর এই কলেজে আছি। নবীনবরণ একটাই হয়। কখনও কোনও বিভাজনকে প্রশ্রয় দিইনি।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের বার বার আমার অফিস-ঘরে ডেকেছি। ওরা আসেনি। ওদের দাবিতে পূর্ব নির্ধারিত নবীনবরণ স্থগিত পর্যন্ত করা হয়েছে। তার পরেও যে ভাবে বিক্ষোভ হয়েছে, তাতে আমি মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। তাই গভর্নিং বডির কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি।’’
এখন কলেজে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ নেই। নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্যে পৃথক কমিটি তৈরি হয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই কমিটিতে সব স্তরের পড়ুয়ারা রয়েছেন। যদিও বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া সাঁওতালি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মার্শাল টুডুর অভিযোগ, ‘‘কলেজের মোট পড়ুয়া সংখ্যার পঞ্চাশ শতাংশ আদিবাসী। অথচ আমাদের অন্ধকারে রেখে নবীনবরণের কমিটি তৈরি হয়েছে। আদিবাসী সংস্কৃতির অনুষ্ঠানও রাখা হয়নি। উপাধ্যক্ষ কমিটির উপর সব দায় চাপিয়ে দেন।’’ প্রতিবাদে অনুষ্ঠান বয়কট করে শুরু হয় বিক্ষোভ।
কলেজের প্রাক্তনী টিএমসিপি-র জেলা সহ সভাপতি অনুনয় ভট্টাচার্যের অবশ্য দাবি, ‘‘সাঁওতালি সংস্কৃতির অনুষ্ঠান রাখার উদ্যোগ ছিল। তার পরেও এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’ সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত সাঁওতালি সাহিত্যিক নিরঞ্জন হাঁসদারও মত, ‘‘শিক্ষাঙ্গনে এমন বিভাজন বাঞ্ছনীয় নয়।’’