পরিবহণ পরিষেবায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে ৩০০ নতুন বাস রাস্তায় নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের দামামা বাজতে এখনও মাসখানেকের অপেক্ষা। তার আগে কেন্দ্রীয় সরকার তো বটেই, সব রাজ্য সরকার জনপরিষেবার উপর জোর দিয়ে নিজ নিজ ভোট ব্যাঙ্কে শান দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। এই কাজে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারও। প্রশাসন সূত্রে খবর, পরিবহণ পরিষেবায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমাতে ৩০০ নতুন বাস রাস্তায় নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর। পরিবহণ দফতরের অধীনে থাকা বিভিন্ন নিগম মারফত এই বড় সংখ্যায় বাস রাস্তায় নামানো হবে বলে জানা গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম এবং উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের মাধ্যমে বাসগুলি রাস্তায় নামবে। এই তিন পরিবহণ নিগমকে কাজে লাগালে রাজ্যের সব জেলায় সরকারি বাস বণ্টনে সুবিধা হবে বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলির মতে, আসন্ন লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখেই এই নতুন বাসগুলি রাস্তায় নামানো হচ্ছে। কারণ সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিয়েই রাজ্যের শাসকদল ভোট পেতে চায়। তাই নতুন বছরের শুরুতেই এই বিরাট সংখ্যায় বাস রাস্তায় নামানোর উদ্যোগ শুরু করেছে পরিবহণ দফতর। তবে বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলির এ কথা মানতে নারাজ দফতরের একাংশ। আধিকারিকদের কথায়, “করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় অস্বাভাবিক হারে বেসরকারি বাস কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েছিলেন। বিশেষ করে বেসরকারি বাসের সংখ্যা কমে গিয়েছে অনেকটাই। ফলে বিষয়টি নিয়ে দফতরে দফায় দফায় আলোচনা করে নতুন বাস রাস্তায় নামানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজনীতির কোনও যোগাযোগ নেই।” পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা মুখে এমন কথা বললেও, শীঘ্রই একটি সরকারি অনুষ্ঠান থেকে এই বিরাট সংখ্যায় বাস চালু করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বিষয়ে পরিবহণ দফতরে জোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
নতুন বাস রাস্তায় নামানোর পাশাপাশি, বিভিন্ন সরকারি ডিপোয় পড়ে থাকা বাসগুলিকেও রাস্তায় নামানোর পরিকল্পনা নিয়েছে পরিবহণ দফতর। দীর্ঘ দিন চলাচল না করার ফলে বাসগুলিতে নানা যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ঠিকঠাক করে সেই বাসগুলিকে পুনরায় রাস্তায় নামাতে বিরাট অঙ্কের অর্থ খরচ করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, এই রকম প্রায় ৩৫০ বাসকে ঠিক করে রাস্তায় নামানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এই কাজে পরিবহণ দফতরের খরচ হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। যদিও এই খরচ বহন করেছে রাজ্য অর্থ দফতর।