এখন হাতেগোনা রুটে ট্রাম চালানো হচ্ছে। —ফাইল চিত্র
কলকাতা পুলিশের অনুমতি পেলেই একাধিক রুটে ট্রাম পরিষেবা শুরু করতে চায় পরিবহণ দফতর। বছর ২০ আগে পর্যন্ত কলকাতার সব রুটে দুই কামরার ট্রাম পরিষেবা চালু ছিল। কিন্তু কালের নিয়মে গতিশীল শহরের সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে একের পর এক রুটে উঠে গিয়েছে ট্রাম পরিষেবা। এখন হাতেগোনা রুটে ট্রাম চালানো হচ্ছে। কোথাও দু’কামরার, কোথাও বার এক কামরার ট্রাম চালানো হচ্ছে।
বর্তমানে মাত্র তিনটি রুটে চলছে ট্রাম পরিষেবা। বালিগঞ্জ–টালিগঞ্জ, ধর্মতলা-গড়িয়াহাট ও ধর্মতলা-শ্যামবাজার রুটের মধ্যেই চলাচল করে হাতেগোনা কয়েকটি ট্রাম। আগামী দিনে আরও দুয়েকটি রুটে ট্রাম চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধর্মতলা-খিদিরপুর রুট। কলকাতা পুলিশের অনুমতি পেলেই আরও বেশ কিছু রুটে ট্রাম চালাতে আগ্রহী পরিবহণ দফতরের শীর্ষ কর্তারা।
দিন দিন কলকাতা রাস্তায় যানজটের সমস্যা বেড়ে যাওয়া দু’কামরার ট্রাম চালানো নিয়ে আপত্তি জানায় কলকাতা পুলিশ। শহরের যানজট কমানোর জন্য তুলে দেওয়া হয় বেশ কিছু ট্রামের রুট। আবার কিছু ট্রামের রুট বন্ধ হয়েছে উড়ালপুল নির্মাণের স্বার্থে, আবার কোনও ট্রাম রুট উঠে গিয়েছে মেট্রো রেলের নির্মাণকার্যের জন্য। তবে বন্ধ হয়ে যাওয়া এমন কিছু রুট রয়েছে, যেখানে এখনও পরিষেবা শুরু করার মতো পরিকাঠামো রয়েছে। তাই পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ট্রাম পরিষেবা চালু করার পক্ষপাতী পরিবহণ দফতরের একাংশ।
এক বার অনুমতি পেলে এক কামরার ট্রাম চালিয়ে শহরবাসীকে ফের ট্রাম চড়ার সুযোগ দিতে চাইছে পরিবহণ দফতর। এ ক্ষেত্রে এক কামরার ট্রামগুলিকে বাতানুকূল করার পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে নোনাপুকুর ট্রাম ডিপোয। এ ক্ষেত্রে পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘দূষণযুক্ত পৃথিবীর জন্য ট্রামের মতো পরিবেশবান্ধব যানের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই আমরা চাই কলকাতা শহরকে দূষণমুক্ত রাখতে বেশি সংখ্যক রুটে ট্রাম চালাতে। পুলিশ প্রশাসন সবুজ সংকেত দিলেই আমরা এ বিষয়ে উদ্যোগ শুরু করব।’’
কলকাতা শহরে ট্রাম পরিষেবার বর্তমান অবস্থা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালকাটা’ নামে একটি সংগঠন। রাজ্য সরকার কি কলকাতা শহর থেকে ট্রাম তুলে দিতে চাইছে? ট্রাম নিয়ে সরকার কী নীতি নিয়েছে? এই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে এ বার বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আদালতের পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত শহরের কোনও রাস্তা থেকে ট্রাম লাইন তোলার কাজ করা যাবে না। আগামী ১২ জুন রাজ্যকে এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ওই দিন মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।