মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে আটকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং একশো দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা। বৈঠক, তদ্বির বা চিঠিপত্র—কোনও কিছুতেই সমস্যার সমাধান হয়নি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তাই ‘কেন্দ্রের বঞ্চনা’র অভিযোগকে প্রচারে এনেছিল তৃণমূল। এখন ভোটের ‘সাফল্য’-কে সামনে রেখে কেন্দ্রের থেকে টাকা আদায়ে দ্বিমুখী কৌশল নেওয়ার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হলেই কেন্দ্রকে ফের প্রকল্পগুলির টাকা ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়া হবে। প্রশাসনিক স্তরে লিখিত ভাবে আর্জি জানাতে চলেছে পঞ্চায়েত দফতর। পাশাপাশি, বরাদ্দ আদায়ে জাতীয় স্তরে রাজনৈতিক ভাবে সরব হওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে শাসক দল। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের বক্তব্য, সাম্প্রতিক ভোটের ফলের পরে বিপুল সংখ্যক আর্থিক অনগ্রসর মানুষের মাথায় পাকা ছাদ নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারের উপরে আরও দায়িত্ব বর্তেছে।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কথায়, “অনেক চিঠি দেওয়া হয়েছে, কাজ কিছু হয়নি। এই ভোটের ফল ওদের (বিজেপির) হজম করতে সময় লাগবে। বুঝতে পারবে, যে ভাবে টাকা বন্ধ করে রেখেছে, তাতে মানুষের রায় তাদেরই বিরুদ্ধে গিয়েছে। জাতীয় স্তরে একশো দিনের কাজ এবং আবাস যোজনার বকেয়া পাওনা নিয়ে আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে।”
গত বছর এপ্রিল-মে মাসে অন্যান্য রাজ্য বাড়ি তৈরির ‘কোটা’ পেয়েছিল। সেই বরাদ্দ এ রাজ্যে আসে গত ডিসেম্বরে। কেন্দ্রের শর্ত মেনেই, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তালিকা সংশোধন এবং ত্রুটিমুক্ত করে প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ উপভোক্তাকে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্য। তার পরে প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও, অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত তা আসেনি। বরং সংশোধিত উপভোক্তাদের তালিকা সঠিক ভাবে তৈরি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে দল পাঠিয়েছিল কেন্দ্র।
দফতর সূত্রের বক্তব্য, মোট ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৪৮৬ জনের মধ্যে প্রায় ৯৭% উপভোক্তার অনুমোদনের কাজ হয়ে গিয়েছিল। বাকি ৩৪ হাজার ৫৩২ জনকে অনুমোদন দেওয়ার কাজ দ্রুত শেষ করতে গত মে মাসে বার্তা পাঠায় কেন্দ্র। ফলে তখন টাকা পাওয়া নিয়ে একটা আশা তৈরি হয়। তবে পঞ্চায়েত ভোট পেরিয়ে গেলেও এখনও সেই টাকার দেখা নেই। তাই সব পঞ্চায়েতের দায়িত্বভার গ্রহণ করে এ ব্যাপারে জোরকদমে এগোতে চাইছে সরকার।