নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
আধার সমস্যার সমাধানে পৃথক কেন্দ্রের পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, নতুন আধার, সেই কার্ডের সংশোধন এবং প্রবীণ নাগরিকদের আধার-বায়োমেট্রিক সমস্যার সমাধান করতে রাজ্য জুড়ে প্রায় আড়াই হাজার নতুন বাংলা সহায়তা কেন্দ্র (বিএসকে) তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেগুলিতে মূলত এই পরিষেবা দেওয়া হবে নিখরচায়। এ ছাড়া, গোটা রাজ্যে উপভোক্তাদের অন্যান্য সহযোগিতায় নতুন আরও প্রায় দেড় হাজার এমন কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রশাসনিক মহলের মতে, গোড়ায় আধার নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে এ রাজ্যের আপত্তি ছিল। আধার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউআইডিএআই পরিচালিত কেন্দ্রগুলি যত দিন ছিল, সেখানে এই পরিষেবা পাওয়া যেত তুলনায় সহজেই। কিন্তু পরবর্তীতে তেমন কেন্দ্রের সংখ্যা অনেক কমে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, এখন আধার সংক্রান্ত কোনও পরিষেবা পেতে গেলে অর্থ খরচ করতে হচ্ছে উপভোক্তাদের। অথচ এখন প্রায় প্রতিটি প্রকল্প এবং পরিষেবায় আধার কার্যত বাধ্যতামূলক হয়েছে। শুধু কেন্দ্রই নয়, রাজ্য সরকারের সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আর্থিক সুবিধাদানের প্রকল্পগুলিতে আধার সংযোগ করতেই হচ্ছে। এই অবস্থায় পৃথক ভাবে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে এই পরিষেবা নিশ্চিত করতে চাইছে নবান্ন।
সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে এক হাজার বিএসকে চালু হচ্ছে জেলায় জেলায়। সেগুলির কাজ প্রায় শেষ। পরবর্তী পর্যায়ে আরও ১১৩৯টি বিএসকে চালু করা হবে। তৃতীয় ধাপে হবে বাকিগুলি। এই কাজ নিয়ে ইউআইডিএআই-এর সঙ্গে সমন্বয় এবং আলোচনা হয়েছে। যন্ত্রপাতি সংগ্রহও এসেছে। তাই কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।
আধিকারিকদের অনেকে জানাচ্ছেন, আধারে বায়োমেট্রিক থাকার কারণে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়ছেন প্রবীণ নাগরিকেরা। কারণ, বয়সের সঙ্গে তাঁদের হাতের চামড়ার পরিবর্তন হওয়ায় বায়োমেট্রিক মিলছে না। ফলে পেনশন-সহ একাধিক কাজে বাড়তি ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে তাঁদের। তাই এখন চোখ স্ক্যান করে বিকল্প যাচাই-পদ্ধতি চালু হবে। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “বায়োমেট্রিক যন্ত্র পরিমার্জন করে আগের তথ্যভান্ডারের সঙ্গে যুক্ত হবে। এখন বাইরে আধার পরিষেবায় একেকজনকে এক-দেড়শো টাকা খরচ করতে হয়। বিএসকে সেই পরিষেবা বিনামূল্যে দেবে।”
প্রশাসনের দাবি, আগে প্রতি ২৮ হাজার জনসংখ্যায় একটি বিএসকে থাকত। নতুনগুলি তৈরি হওয়ার পরে প্রতি ২০ হাজার জনসংখ্যায় থাকবে একটি করে বিএসকে। আগামী দিনে সব ধরনের আবেদনপত্রের সঙ্গে রেল এবং বাসের টিকিট কাটার সুবিধাও পাওয়া যাবে। বিএসকে-র মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে।