প্রতীকী ছবি
মেট্রো প্রকল্পে গঙ্গার নীচ দিয়ে প্রথম সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছে। এ বার দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ খোঁড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ। শহরের ভিড় এড়িয়ে কলকাতা বন্দর থেকে ট্রেলার-ট্যাঙ্কার, ট্রাক-কনটেনার জাতীয় সড়কে পৌঁছাতে এই ভাবনা। তা হলে একদিকে যেমন শহর কলকাতার যানজট কাটানো যাবে, তেমনই কলকাতা বন্দর থেকে সরাসরি গঙ্গার নীচ দিয়ে পণ্য পৌঁছে যাবে শহরের বাইরে জাতীয় সড়কে। শনিবার সিআইআই-কলকাতা আয়োজিত এক ওয়েবিনারে একথা ঘোষণা করেছেন বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার।
তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা বন্দর শহরের মাঝে। ফলে দিন-রাত পণ্য পরিবহণে বিস্তর সমস্যা। বিকল্প হিসেবে বন্দর থেকে দ্বিতীয় বিদ্যাসাগর সেতু পর্যন্ত উড়ালপুলের কথা ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু মেট্রো রেল প্রকল্পে সাফল্যের সঙ্গে সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছে। আমরাও বিশেষজ্ঞ সংস্থা লাগিয়ে আরও একটা সুড়ঙ্গ খোঁড়ার ব্যাপারে পরামর্শ নিচ্ছি। পৃথিবীর নদীবন্দর গুলিতে এক দিক থেকে অন্যদিকে পণ্য নিয়ে যেতে সুড়ঙ্গ ব্যবহার করা হয়। কলকাতার ক্ষেত্রেও তা ভাবা হচ্ছে। পরামর্শদাতা সংস্থার রিপোর্ট এলে খরচের ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যাবে।’’
বণিকসভার বৈঠকে উপস্থিত বন্দর ব্যবহারকারীরা এই সিদ্ধান্তে খুশি। তাঁদের অধিকাংশের ধারণা, বন্দরের নিজস্ব সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়ে গেলে কলকাতা বন্দরে পণ্য খালাস আরও দ্রুত সারা যাবে। এখন বন্দর এলাকা থেকে কনটেনার সরাতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয় বিভিন্ন সংস্থাকে। শহরের ঝঞ্ঝাট এড়াতে সুড়ঙ্গের চেয়ে ভাল বিকল্প কিছু হতে পারে না বলে তাঁদের মত।
এদিনের সভায় কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য উপস্থিত ছিলেন। গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ত্রিপুরাতে পণ্য পাঠানো শুরু হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘ সড়ক পথের পরিবর্তে জলপথে হলদিয়া-কলকাতা থেকে সুন্দরবন হয়ে বাংলাদেশে প্রোটোকল রুট ধরে চট্টগ্রামে পণ্য গিয়েছে। সেখানে থেকে মাত্র ২০০ কিমি পথ পেরিয়ে তা পৌঁছেছে ত্রিপুরায়। এই প্রোটোকল রুট ধরে আরও জাহাজ চালানোর ব্যাপারে বণিক সভার সদস্যদের এগিয়ে
আসার আহ্বান করেন তিনি। বারানসী-হলদিয়া জলপথে পণ্য পরিবহণ বাড়াতেও কেন্দ্রীয় সরকার নদীতে অন্তত ২ মিটার নাব্যতা এবং ১৮টি জেটি নির্মাণের ব্যবস্থা করছে বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন,‘‘জলপথে পণ্য পরিবহণ বাড়াতে সরকার জলপথ কর পুরোপুরি ছাড় দিয়েছে। গত সপ্তাহে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে আগের চেয়ে সস্তায় গঙ্গা দিয়ে পণ্য পরিবহণ সম্ভব হবে। অন্যদিকে কলকাতা-হলদিয়া থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-মঙ্গলা বন্দর হয়ে ডিব্রুগড় পর্যন্ত পণ্য পরিবহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
অন্তদের্শীয় জলপথ পরিবহণ সংস্থার প্রধান অমিতা প্রসাদ জানান, বাংলাদেশে পণ্য পরিবহণের সুবিধার জন্য সুন্দরবনে নাইট নেভিগেশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার এই জলপথ বিকাশের জন্য ৬৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এক নম্বর জাতীয় জলপথ(বারানসী-হলদিয়া) এর পরিকাঠামো তৈরির জন্য খরচ হবে ৪০০০ কোটি টাকা।