নওসাদ সিদ্দিকী। —ফাইল চিত্র।
আইএসএফের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আজ, রবিবার সভা হচ্ছে কলকাতায়। এক হাজারের বেশি লোক নিয়ে জমায়েত করা যাবে না বলে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ভাঙড়ে এই উপলক্ষে যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক পুলিশ-প্রশাসন।
ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্র আইএসএফের শক্ত ঘাঁটি। এই কেন্দ্র থেকে জিতেই বিধায়ক হয়েছেন নওসাদ সিদ্দিকী। প্রতিষ্ঠা দিবসে ভাঙড় থেকে বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক যাতে কলকাতায় জমায়েত না করেন, সে জন্য আইএসএফের পক্ষ থেকে বিজয়গঞ্জ বাজার মেলার মাঠে সভার আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় লাগানো হচ্ছে জায়ান্ট স্ক্রিন। ভাঙড়ে বসেই সরাসরি লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে দলের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীর বক্তব্য শুনবেন দলীয় কর্মীরা।
শুক্রবার উত্তর কাশীপুর থানার ওসি অমিত চট্টোপাধ্যায় ভাঙড়ের আইএসএফ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে হাই কোর্টের নির্দেশ বুঝিয়ে দেন। এ দিন এলাকায় যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সতর্ক করা হয়। আজ এলাকা থেকে কোনও মোটরবাইক মিছিল করা যাবে না। শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়, এমন কোনও ঘোষণা বা কাজও করা যাবে না।
গত বছর আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবসে উত্তাল হয়েছিল ভাঙড়ের হাতিশালা ও কলকাতা। হাতিশালায় আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষে কয়েক জন জখম হন। তৃণমূলের তিনটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের পাশাপাশি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে আইএসএফের বিরুদ্ধে। কলকাতাতেও পুলিশ-আইএসএফ খণ্ডযুদ্ধ বাধে। নওসাদ-সহ ৫০ জন গ্রেফতার হন।
এ বছর প্রতিষ্ঠা দিবসের আগেই আইএসএফের সঙ্গে তৃণমূলের বেশ কয়েকটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তাই নতুন করে গন্ডগোল এড়াতে সতর্ক কলকাতা পুলিশের ভাঙড় ডিভিশন ও পূর্ব ডিভিশন। ভাঙড়ের বিভিন্ন থানায় বাহিনী বাড়ানো হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা দফতর ও গুন্ডা দমন শাখার অফিসারেরা নজরদারি চালাচ্ছেন। সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন রাখা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিতে থাকবে সশস্ত্র পুলিশের পাহারা।
আইএসএফের ভাঙড়-২ ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদ সদস্য রাইনুর হক বলেন, ‘‘প্রতিষ্ঠা দিবসে আমরা ভাঙড়ের বিভিন্ন বুথে দলীয় পতাকা উত্তোলন করব। দলীয় কর্মীদের জানিয়েছি, কোনও প্ররোচনায় পা দেওয়া যাবে না।’’ তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য হাকিমুল ইসলাম বলেন, ‘‘ওদের নিয়ে যত কম কথা বলা যায়, ততই ভাল। গত বছর প্রতিষ্ঠা দিবসের নামে ওরা যে ভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে, আমাদের দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে, তা ভাঙড়ের মানুষ দেখেছেন।’’ তাঁর আশঙ্কা, এ বারও প্রতিষ্ঠা দিবসে অশান্তি করতে পারে আইএসএফ। তাঁর কথায়, ‘‘দলীয় কর্মীদের বলেছি, প্ররোচনায় পা না দিতে।’’