ধৃত মুসাভির হুসেন সাজিব এবং আবদুল মাথিন তাহা। — ফাইল চিত্র।
কলকাতা থেকে ঘুরে চেন্নাই পৌঁছনোর অব্যবহিত পরেই গ্রেফতার হয়েছিল বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণে অভিযুক্ত মুজ়াম্মিল শরিফ। কলকাতাও যে আর নিরাপদ নয়, ঠিক তার পরেই নির্দেশ এসে পৌঁছেছিল আরও দুই অভিযুক্ত আবদুল মাথিন আহমেদ ত্বহা এবং মুসাভির হুসেন শাজিবের কাছে। যাদের গত শুক্রবার ভোরে নিউ দিঘা থেকে গ্রেফতার করে এনআইএ।
রামেশ্বরম কাফে বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ত্বহা ও শাজিব পালিয়ে কলকাতায় এসে ধর্মতলার দু’টি হোটেলে কিছু দিন ছিল। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, মুজ়াম্মিল কলকাতায় এসে তাদের টাকা দিয়ে যায়। চেন্নাই ফিরে ২৮ মার্চ যখন সে এনআইএ-র হাতে ধরা পড়ে, ততক্ষণে ত্বহা ও শাজিব ধর্মতলার হোটেল ছেড়ে পৌঁছে গিয়েছিল একবালপুরের এক অতিথিশালায়। কারণ, কোনও জায়গাতেই তারা বেশি দিন থাকছিল না।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, কলকাতা ছাড়ার নির্দেশ পেয়ে প্রথমে তারা হাওড়া পোঁছয়। যদিও তুলনায় সহজে তারা ধর্মতলা থেকে দিঘার বাস ধরতে পারত, তারা হাওড়াকে বেছে নেয়। সেই সিসিটিভি ফুটেজ এসে পৌঁছেছে গোয়েন্দাদের হাতে। একই সঙ্গে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ২৮ মার্চ থেকে গ্রেফতার হওয়া পর্যন্ত কাঁথি, দিঘার একাধিক হোটেলে লুকিয়ে ছিল তারা।
মুজ়াম্মিল গ্রেফতারের পরে ঠিক কাদের কাছ থেকে কলকাতায় নির্দেশ এসেছিল, তা নিয়ে প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের মনে ধোঁয়াশা থাকলেও পরে তাঁরা নিশ্চিত হন, ‘আল হিন্দ মডিউল’-এর কারও নির্দেশ মেনেই তারা ওই কাজ করেছিল। যদিও প্রাথমিক ভাবে ‘আল হিন্দ মডিউল’-এর অস্তিত্ব এ রাজ্যে নেই বলেই অনুমান রাজ্য পুলিশের।
গোয়েন্দাদের অনুমান, ধৃতরা বাংলাদেশ পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষ লোকের ব্যবস্থা করতেই তারা ১০ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত কলকাতায় থেকে যায়। মাঝে অবশ্য এক বার দার্জিলিং গিয়েছিল দুই অভিযুক্ত। এক দিনের জন্য পুরুলিয়া হয়ে রাঁচীও যায় দু’জনে। যা দেখে গোয়েন্দারা মনে করছেন, দার্জিলিং থেকে নেপাল পালিয়ে যাওয়ার বিকল্প ভাবনাও হয়তো তাদের ছিল।
এ রাজ্যে তাদের লুকিয়ে থাকতে বা পালিয়ে বেড়াতে কারা সাহায্য করেছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে। এক তদন্তকারী জানিয়েছেন, রাঁচীতে ওই দু’জনকে টাকা এবং মোবাইল সিম তুলে দিয়েছিল এক জন। যার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, কলকাতায় থাকার সময় ত্বহা এবং শাজিব ফোন ব্যবহার করেনি। রাঁচী যাওয়ার সময়ে পুরুলিয়ায় প্রথম ফোন ব্যবহার করে তারা।