—প্রতীকী ছবি।
এ বার জেলায় জেলায় ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ সশরীরে খতিয়ে দেখতে আসরে নেমেছেন নির্বাচন কমিশন এবং মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) কার্যালয়ের কর্তারা। জেলা ধরে ধরে একেবারে বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) পর্যন্ত পৌঁছে চলছে যাচাইয়ের কাজ। যার রিপোর্ট নিয়মিত পাঠাতে হচ্ছে দিল্লির নির্বাচন সদনেও। অভিজ্ঞ আধিকারিকদের মতে, এই প্রথম এত গভীর ভাবে প্রতিটি জেলায় হচ্ছে এমন যাচাই।
ভোটার তালিকা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ নতুন নয়। আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকার দাবিতে সরব তাঁরা। ঘটনাচক্রে, ভোটার তালিকা সংশোধনের চলতি প্রক্রিয়া শুরুর আগে থেকে কমিশনও তাতে বাড়তি জোর দিয়েছে। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভোটার তালিকা সংশোধন-প্রক্রিয়ায় আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে। তার আগে আজ, শনিবার এবং আগামিকাল, রবিবার বিশেষ শিবির করা হবে প্রতিটি বুথে। বুথে গিয়ে অথবা অনলাইনে আবেদনপত্র জমা করা যাবে।
এই যাচাইয়ে সিইও কার্যালয়ের প্রত্যেক অফিসারকেই ছুটতে হচ্ছে জেলায় জেলায়। অভিযানে রয়েছেন সিইও আরিজ় আফতাব নিজেও। জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং জেলার সিনিয়র অফিসারেরাও ব্লকগুলিতে ঘুরে ঘুরে চালাবেন নজরদারি। ইতিধ্যেই ১৮টি জেলায় যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার দুই ২৪ পরগনায় নিজে গিয়ে কাজ যাচাই করেছেন সিইও। শনি এবং রবিবার উত্তরবঙ্গের ছ’টি জেলায় ঘুরে যাচাই করতে হবে সিইও কার্যালয়ের বাকি অফিসারদের।
এক কর্তার কথায়, ‘‘আগে জ়োন ভাগ করে এই যাচাই হত। এখন তা জেলা ধরে ধরে হচ্ছে। বিডিও এমনকি, বিএলও স্তর পর্যন্ত গিয়ে সেই যাচাই করতে হচ্ছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন নিয়মিত এই রিপোর্ট নিচ্ছে।’’
১ নভেম্বর থেকে তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরুর আগেই কমিশন স্পষ্ট করে দিয়েছিল, এ বারের তালিকা হতে হবে নির্ভুল। তাদের নির্দেশ, এমন নাম যা থাকার কথা নয়, তা যেমন বাদ দিতে হবে, তেমনই বাতিল হবে মৃত ভোটারদের নাম। তেমনই একাধিক জায়গায় কারও নাম তালিকায় থাকলে, পদ্ধতি মেনে তা সংশোধন করতে হবে। সমান্তরালে নতুন ভোটারেরা যাতে সকলে তালিকায় জায়গা পান, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। বস্তুত, এই প্রক্রিয়া শুরুর আগে থেকেই বিরোধীরা কড়া নজর রেখেছেন। বিভিন্ন সময়ে দাবিদাওয়া এবং অভিযোগ করেছেন কমিশনের কাছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘গত অগস্ট থেকেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করে বিএলও-রা বুঝে এসেছেন কোথায় কী ধরনের সংশোধন, পরিমার্জন বা তালিকাভুক্তি প্রয়োজন। সেই সমীক্ষার অভিজ্ঞতা থেকে আবেদনপত্রগুলি যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
ইতিমধ্যেই দিল্লির নির্বাচন সদন থেকে কমিশনের এক জন সচিব এবং এক জন আন্ডার-সেক্রেটারি ঘুরে গিয়েছেন রাজ্যে। ছ’-সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে তালিকা সংশোধনের কাজ খতিয়ে দেখে নির্বাচন সদনে রিপোর্ট দিয়েছেন তাঁরা। আগামী ৫ জানুয়ারি সংশোধিত এবং চূড়ান্ত যে ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে, তার ভিত্তিতে হবে আগামী বছরের লোকসভা ভোট।