সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র।
ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়ে সিপিএম-কংগ্রেসের মধ্যে টানাপড়েন চলছিলই। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরেই সেই টানাপড়েন বেড়ে গিয়েছে আরও কয়েক গুণ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বহু আগেই ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিতে চাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের পদক্ষেপ দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে চায় সিপিএম। যেহেতু আসন রফায় ভবানীপুর কংগ্রেসের জন্য ছাড়া হয়েছিল, তাই আগ বাড়িয়ে প্রার্থী নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তই প্রকাশ্যে আসতে দিতে নারাজ তারা। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে খবর, যদি শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস ভবানীপুরে প্রার্থী না দেয়, তাহলে প্রার্থী দেবে সিপিএম।
মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত আলোচনার জন্য আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বামফ্রন্টের সমস্ত শরিকদলকে বৈঠকে ডেকেছে সিপিএম। তার আগে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে নিতে চান রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, কলকাতা জেলা কমিটিকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েই রেখেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। ভবানীপুরে প্রার্থী করা হতে পারে কলকাতা জেলা কমিটির কোনও নেতা অথবা নেত্রীকেই। তবে আগ বাড়িয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে না তারা। কারণ, দলগত ভাবে সিপিএম সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কারও সঙ্গে জোট ভাঙার দায় নেবে না তারা। তাই কংগ্রেস নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপের প্রস্তুতি রাখছে তারা।
এ ক্ষেত্রে অবশ্য বামফ্রন্টের অন্দরের সমীকরণকেও মাথায় রাখতে হচ্ছে তাদের। কারণ, সম্প্রতি ফরওয়ার্ড ব্লক সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংযুক্ত মোর্চার নামে কোনও ফ্রন্টে থাকবে না তারা। তাই এ ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে আপত্তি রয়েছে ফব-র। এমনকি কংগ্রেস প্রার্থী দিলে পৃথকভাবে ভবানীপুর উপনির্বাচনে প্রার্থীও দিতে পারে ফব।এমনটা হলে যে বিরোধী জোটের পক্ষে জনমানসে ভাল বার্তা যাবে না, তা ভালই বোঝেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের কর্তারা। তাই কোনও সিদ্ধান্তগ্রহণের আগে সবার সঙ্গেই আলোচনার পক্ষপাতী রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘কোনও সিদ্ধান্ত হলে তা সবার সঙ্গে কথা বলেই হবে।’’ সোমবার বিধান ভবনে আসবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। সেখান তিনি কী ঘোষণা করেন সেদিকেই তাকিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।